নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে থাকা যুবককে শ্যালক পরিচয় দিয়ে জাল আধার কার্ড করিয়ে দিলেও শেষরক্ষা হল না। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী যুবক ও দালালকে গ্রেপ্তার করল চাপড়া থানার পুলিস। সোমবার রাতে শিকরা এলাকা থেকে তাদের পাকড়াও করা হয়। ধৃত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর নাম রাসেল ইসলাম। তার বাড়ি বাংলাদেশের দেবীগঞ্জ থানা এলাকায়। ধৃত দালাল আব্দুল সালাম মণ্ডলও প্রায় ২০বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এদেশে এসেছিল। এদেশে বিয়ে করে এখানেই থেকে গিয়েছে সে। রাসেলকে নিজের শ্যালক হিসেবে পরিচয় দিয়ে চাপড়ায় এনেছিল সে। উত্তর ২৪পরগনার বনগাঁ থেকে জাল আধার কার্ডও বানিয়ে দিয়েছে সে। তা উদ্ধার করেছে চাপড়া থানার পুলিস। মঙ্গলবার ধৃতদের কৃষ্ণনগর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রয়োজনে তাদের পুলিসি হেফাজতে নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। ধৃত দালালের বাড়ি থেকে বাংলাদেশি সিমকার্ড, সেদেশের টাকা বিভিন্ন নথিপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল বলেন, শিকরা এলাকা থেকে এক বাংলাদেশি ও দালালকে গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনুপ্রবেশকারী মুম্বই থেকে ফিরেছিল। ধৃত দালাল দীর্ঘদিন ধরে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল। অবশেষে দু’জনকেই ধরা গিয়েছে। ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ২১-এর রাসেল বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার পাইগনপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ১৭ মাস আগে সে উত্তর দিনাজপুরে সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে ঢুকেছিল। তারপর সে মুম্বই চলে যায়। সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করত সে। যদিও তখন তার কাছে কোনও বৈধ পরিচয়পত্র ছিল না। পুলিসের অনুমান, সম্প্রতি মুম্বইতে বাংলাদেশি সন্দেহে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে। সেই আতঙ্কেই রাসেল বৈধ পরিচয়পত্র জোগাড় করতে উঠেপড়ে লাগে। দালাল আব্দুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ধৃত আব্দুল সালাম দীর্ঘদিন ধরে চাপড়া এলাকায় বাংলাদেশিদের ভুয়ো নথি দিয়ে ভারতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে দিত। শ্যালক সাজিয়ে অনুপ্রবেশকারীকে বনগাঁ থেকে আধার কার্ড বানিয়ে দেয় সে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সোমবার রাতে শিকরা এলাকায় অভিযান চালায় চাপড়া থানার পুলিস। সেখান থেকেই দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দালালের বাড়ি থেকে সাতটি বাংলাদেশি সিমকার্ড পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশি টাকাও বাজেয়াপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন নথি পাওয়া গিয়েছে। পুলিস সবকিছু বাজেয়াপ্ত করে তদন্ত চালাচ্ছে। চাপড়া থানার এক আধিকারিক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আব্দুলের উপর নজর রাখা হয়েছিল। কিন্তু প্রমাণের অভাবে তাকে ধরা যাচ্ছিল না। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শিকরায় অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে তাদের ধরা হয়েছে। -নিজস্ব চিত্র