উপভোক্তাদের কাজের অগ্রগতি যাচাই করার নির্দেশ, বাংলার বাড়ির কাজে রাজ্যের মধ্যে শীর্ষস্থানে নদীয়া জেলা
বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৫
অগ্নিভ ভৌমিক, কৃষ্ণনগর: বাংলার বাড়ির কাজে রাজ্যের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে নদীয়া জেলা। এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে সর্বাধিক বাড়ি তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে নদীয়া জেলায়। দ্বিতীয় স্থানে থাকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নদীয়ার ধারেকাছেও নেই। নদীয়ায় ৬২ শতাংশ বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় মাত্র ২৪ শতাংশ কাজ হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা মুর্শিদাবাদ জেলায় ৮ শতাংশ বাড়ি তৈরি হয়েছে। সেখানে গোটা রাজ্যে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করার হার ৭ শতাংশ। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে নদীয়া জেলার এই পারফরম্যান্সে খুশি প্রশাসনের আধিকারিকরাও। সম্প্রতি ‘বাড়ি সম্পূর্ণকরণ সপ্তাহ’ পালন করতেই বাংলার বাড়ি প্রকল্পে জেলার এই চিত্র উঠে এসেছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফার বাংলার বাড়ি প্রকল্পে উপভোক্তাদের টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। তার আগে প্রথম দফার কাজ শেষ করতে তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসন। যাঁরা এখনও বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করেননি, প্রতি সপ্তাহে তাঁদের কাজের অগ্রগতি যাচাই করা হবে স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে। নদীয়ার জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ বলেন, বাংলার বাড়ি প্রকল্পের কাজে আমরা শুরু থেকেই জোর দিয়েছিলাম। বাড়ি তৈরির কাজকে ত্বরান্বিত করতে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যাতে এই ধারা বজায় থাকে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলায় বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছিলেন ৪৬ হাজার ৩৭৬জন উপভোক্তা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে সেই টাকা দেওয়া হয়েছিল। ২০২৫ সালের মে মাসে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৮১৮ জন উপভোক্তা। তারপর দেখা যায়, তিনমাসে মাত্র ২০২১জন বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করেছেন। এই পরিসংখ্যান জেলা প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়ায়। আধিকারিকদের অনুমান, ওই সময়ের মধ্যে অন্তত ১২-১৪ হাজার উপভোক্তার বাড়ি তৈরির কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা। তারপরেও জেলার ১৮৫টির মধ্যে ১১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে একটিও বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়নি।
যার জেরে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ‘বাড়ি সম্পূর্ণকরণ সপ্তাহ’ নামে কর্মসূচি করা হয়। উপভোক্তারা বাড়ি তৈরির কাজ কতটা সম্পূর্ণ করেছেন, তা গ্রামে গিয়ে দেখেন সমীক্ষকরা। সম্প্রতি, জেলাজুড়ে বাড়ি তৈরির কাজ সম্পূর্ণকরণের তথ্য উঠে এসেছে। দেখা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত নদীয়া জেলায় ২৮ হাজার ১৯০ জন উপভোক্তা বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করেছেন। যা দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়া উপভোক্তার ৬২ শতাংশ।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলার মধ্যে নাকাশিপাড়া ব্লকে ৯৪ শতাংশ, কৃষ্ণনগর-২ ব্লকে ৮৩ শতাংশ এবং হরিণঘাটা ব্লকে ৮১ শতাংশ বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এই তিনটি ব্লক জেলার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে। হাঁসখালি, শান্তিপুর ও চাপড়া ব্লক জেলার মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। সেখানে যথাক্রমে ৩৫, ৪৪ এবং ৪৪ শতাংশ বাড়ি তৈরি হয়েছে।
যারা এখনও পর্যন্ত বাড়ি তৈরি শেষ করেননি, তাঁরা যাতে কাজের গতি বাড়ান সেইদিকেও জোর দেওয়া হচ্ছে। সেইমতো পঞ্চায়েতগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নদীয়া জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক(জেলা পরিষদ) অনুপকুমার দত্ত বলেন, প্রতি সপ্তাহে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে পঞ্চায়েত যোগাযোগ করবে, তাঁদের কাজ কতটা এগিয়েছে তা দেখার জন্য।