চোপড়ায় বন্ধ বাগানের জমি বিক্রি রুখতে সাইনবোর্ড লাগাল প্রশাসন
বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, চোপড়া: চোপড়া ব্লকে একটি গ্রুপের বন্ধ চা বাগানের জমি অবৈধভাবে বিক্রি রুখতে সাইনবোর্ড লাগাল জেলা প্রশাসন। অভিযোগ, এই বাগানের জমি অবৈধভাবে বিক্রি করছে অসাধু লোকজন। সেজন্যই এই সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। চোপড়া ব্লকে ওই গ্রুপের সবক’টি চা বাগান গত এক দশকের বেশি সময় ধরে অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গোয়ালগছ, লালবাগ, লক্ষ্মীপুর, পাঁচমৌজা, আনারকলি ডিভিশনে অচলাবস্থা চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে কর্তৃপক্ষ বাগান ছেড়ে চলে যায়। প্রথম অবস্থায় সবক’টি ডিভিশনের শ্রমিক-কর্মচারীরা মিলিতভাবে বাগান পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়। তারপর থেকে কয়েক জায়গায় স্থানীয়রা নিজেরাই জমি ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়া শুরু করেন। কোথাও আবার দালালচক্রের মাধ্যমে জমি বিক্রির অভিযোগ উঠছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ঘিরনিগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ড বসাচ্ছে। সেগুলিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই সংস্থার জমি কেনা ঝুঁকিপূর্ণ এবং যদি কেউ এই জমি কেনেন, তাহলে পরবর্তীতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এর কোনও দায় নেবে না।
চোপড়ার ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ললিতরাজ থাপা বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশে এলাকায় প্রচার চালানো হচ্ছে, যাতে কেউ এই জমি কেনাবেচার চক্রে জড়িয়ে না পড়েন। জেলাশাসকের নির্দেশে মানুষকে সচেতন করতে সাইনবোর্ডও বসানো হচ্ছে। ওই গ্রুপ বাগান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকেই একটি চক্র এই বন্ধ বাগানের জমি বিক্রির ছক কষছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ডিভিশনের জমি ইতিমধ্যে অনেকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন। দখল করা এই জমিগুলি বিক্রি করার পরিকল্পনা চলছে। এই খবর প্রশাসনের কানে পৌঁছনোয় তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। এই ঘটনায় বিরোধীরা শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে দুষছে। চোপড়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মহম্মদ মসিরুদ্দিন বলেন, ওই গ্রুপের অচল বাগানের জমি প্লট করে বিক্রির পরিকল্পনা চলছে। শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্ব মানুষকে ভুল বুঝিয়ে টাকার বিনিময়ে জমি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিচ্ছে। সিপিএম নেতা আনসারুল হক জানিয়েছেন, শাসক দলের নেতারা টাকার বিনিময়ে বাগানের জমি শ্রমিক ও জমিদাতাদের কাছেই বিক্রি করছে। অন্যদিকে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বিরোধীদের এই অভিযোগকে পাত্তা দিতে নারাজ। তৃণমূল নেতা তথা চোপড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি ফজলুল হক বলেন, শ্রমিকরা বাগানের দেখভাল করছিলেন। পরবর্তীতে কিছু জায়গায় বেশি উৎপাদনের আশায় তাঁরা জমি ভাগ করে নেন। কোথাও জমি বিক্রি হয়েছে বলে জানা নেই। নিজস্ব চিত্র