• ঘাঠিয়ায় হড়পা বান, আর্থমুভার এনে তিনজন শ্রমিককে উদ্ধার
    বর্তমান | ২৩ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, নাগরাকাটা: বৃষ্টির তেমন দাপট নেই। তা হলেও হড়পা বান ও নদী ভাঙনে বিধ্বস্ত জলপাইগুড়ি জেলা। মঙ্গলবার নাগরাকাটা ব্লকে ঘাঠিয়া নদীতে হড়পা বানে আটকে পড়েন বিহারের তিন শ্রমিক। আর্থমুভার এনে তাঁদের উদ্ধার করেছে ব্লক প্রশাসন। শুধু তাই নয়, বামনডাঙায় জলঢাকা ও ঘাঠিয়া নদীর সঙ্গমস্থলে ভেঙেছে বাঁধ। ক্রান্তি ও বানারহাটে দু’টি এলাকায় নদীর পাড়ের মাটি ধসে গিয়েছে। এনিয়ে তিনদিনে জেলার ছ’টি জায়গায় নদীর পাড় ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়েছে সেচদপ্তর।

    এদিকে, এদিন শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের আকাশে মেঘ জমলেও বৃষ্টির দেখা নেই। অস্বাভাবিক গরম রয়েছে। আজ, বুধবার পাহাড় ও সমতলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সেই সঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে কিছু জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টিও হতে পারে। তবে গরম একই রকম থাকবে। 

    এদিন সাড়ে ৫টা নাগাদ নাগরাকাটায় গ্রাসমোড় চা বাগানের কাছে ঘাঠিয়া নদীতে আচমকা হড়পা বান আসে। তাতেই মাঝনদীতে আটকে যান বিহারের তিন শ্রমিক। প্রশাসন সূত্রের খবর, শ্রমিকদের নাম যোগেশ গুপ্তা, রাধে কৃষ্ণ ও মোহন সিং। বিহারের রহতুয়া গ্রামে তাঁদের বাড়ি। এদিন সকালে একটি তেল কোম্পানির কাজ করতে নদীর উল্টোপারে যান ওই শ্রমিকরা। তখন নদীতে তেমন জল ছিল না। বিকেলে কাজ শেষ করে নদী পেরিয়ে এপারে আসছিলেন। সেই সময় হড়পা বানে তাঁরা নদীর মাঝখানে আটকে পড়েন। কোনওরকমে একটি বড় পাথর আঁকড়ে ধরে থাকেন তাঁরা। চিৎকার শুনে নদীর পাড়ে ভিড় করেন স্থানীয়রা। 

    খবর পেয়ে আর্থমুভার নিয়ে ওই শ্রমিকদের উদ্ধার কাজে নামে পুলিস ও ব্লক প্রশাসন। কিছুক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে তারা ওই শ্রমিকদের মাঝ নদী থেকে উদ্ধার করে। যার নেতৃত্ব দেন বিডিও পঙ্কজ কোনার ও নাগরাকাটা থানার আইসি কৌশিক কর্মকার। বিডিও বলেন, সময়মতো হড়পা বানের খবর পাওয়ায় ওই শ্রমিকদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। না হলে তাঁদের প্রাণ সংশয় হতে পারত। 

    এদিকে, এদিন জলঢাকা ও ঘাঠিয়া নদীর যৌথ থাবায় বামনডাঙা চা বাগানে ভেঙেছে বাঁধ। ফলে বাগানের বাসিন্দারা রীতিমতো আতঙ্কিত। প্লাবনের আশঙ্কায় তাঁদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে।

    স্থানীয়রা বলেন, দু’দিন আগে জোর বৃষ্টি হওয়ায় দুই নদীর সঙ্গমস্থলে বাঁধের মাটি দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। এদিন বাঁধের ১০ মিটার অংশ ভেঙেছে। পাহাড় কিংবা স্থানীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টি হলে দুই নদীর সঙ্গমস্থল আবার ফুলেফেঁপে উঠতে পারে। তাতেই প্লাবিত হতে পারে গোটা চা বাগান। তাই জরুরি ভিত্তিতে বাঁধটি মেরামত করা প্রয়োজন। 

    এদিনই ক্রান্তির প্রেমগঞ্জে চ্যাংমারিতে তিস্তা নদীর পাড়ের ২০০ মিটার অংশ এবং চামুর্চিতে হাতিনালার পাড়ের ৫০ মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেচদপ্তরের উত্তর-পূর্ব বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক অবশ্য বলেন, চ্যাংমারিতে নদীর পাড় মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকা নজরে রয়েছে। আর বানারহাট ব্লক রক্ষা করতে হাতিনালার একাংশ ডাইভার্ট করার চিন্তভাবনা চলছে। বামনডাঙার ঘটনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  ক্ষতিগ্রস্ত নদীবাঁধ। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)