• আগুন দামে হতাশ ক্রেতা
    আনন্দবাজার | ২২ জুলাই ২০২৫
  • খুঁটি পুজো হয়ে গিয়েছে বেশিরভাগ ক্লাবের। দেখতে দেখতে এসে পড়বেন বিশ্বকর্মা। কিন্তু এ বর্ষায় উত্তরবঙ্গের প্রায় প্রতিটি বাজার থেকেই হতাশ হয়ে ফিরতে হচ্ছে ইলিশ-ভক্তদের। গত বছর পর্যন্ত মাছ অনেকটা দাম কমেই মিলছিল। তার চেয়েও খারাপ স্বাদের মাছ হাজার টাকার কমে এ বারে হাতে ছোঁয়া যাচ্ছে না বলে আক্ষেপ মৎস্যপ্রেমীদের। বাংলাদেশ থেকে আমদানি বন্ধ। ‘বিড়ালের মতো’ সারা বাজার খুঁজে কেউ কেউ এক–আধটা কিনচ্ছেন বটে। তবে মুম্বইয়ের ইলিশ মন ভরাতে পারছে না উত্তরের খাদ্যরসিকদের।

    পুজোর মরসুমের আগে উত্তরবঙ্গের বাজারগুলি থেকে প্রায় উধাও হয়েছে ইলিশ। এক কেজি ইলিশের দাম অনেকেরই নাগালের বাইরে। বালুরঘাটের মাছ ব্যবসায়ী নীলকমল হালদার বলেন, ‘‘মরসুমের প্রথমে ইলিশ তুলছিলাম। কিন্তু গ্রাহকদের চাহিদার সঙ্গে দামে পোষানো যাচ্ছে না। নিয়মিত বিক্রি কমছিল। তাই আপাতত বন্ধ রেখেছি।’’

    হিলি, মহদিপুর, চ্যাংরাবান্ধার মতো বেশ কিছু সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে বাংলাদেশের কাঁচা ইলিশ পাওয়া যেত। এ বছর যেন তাতেও আকাল। তাই দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সর্বত্র ইলিশের দাম বেড়ে রয়েছে। মোটামুটি ভাল ইংলিশ কেজিতে ১০০০-১২০০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছরের তুলনায় যা দ্বিগুণেরও বেশি বলে দাবি করছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।

    শিলিগুড়ির চম্পাসারির পাইকারি বাজার থেকে উত্তরের বিভিন্ন জেলায় মাছ যায়। সেখানকার মাছ ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা বাপি সাহা বলেন, ‘‘মুম্বই উপকূল থেকে ধরা সামান্য কিছু ইলিশ মাছ আসছে। তবে বাংলাদেশের মাছ শুনলে যে শিহরণ জাগে, তা গ্রাহকদের মধ্যে নেই। ফলে এ বছর অন্তত কুড়ি শতাংশ ব্যবসা কম।’’

    মূলত, ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজার থেকে উত্তরবঙ্গের বাজারগুলিতে মাছ আসে। যদিও, ব্যবসায়ীদের দাবি, সে সব এক বছর ধরে হিমঘরে রাখা মাছ, স্বাদ নেই। কয়েক বছর ধরে অতিরিক্ত পরিমাণে বাচ্চা ইলিশ ধরার কারণেও মাছের জোগান কমা অস্বাভাবিক নয় বলে তাঁদের দাবি। গত বছরও ছয় ইঞ্চির কম (মোবাইল ইলিশ) ইলিশ বাজারগুলিতে দেখা গিয়েছিল। এ সবের জেরে উত্তরবঙ্গের বহু বাজারে খুচরো দোকান এ বার ইলিশ তোলা বন্ধ করেছে। তার জেরে এ বছরও দুর্গাপুজোয় পর্যাপ্ত ইলিশ না পাওয়ার ইঙ্গিত এখনই জোরাল। বিকল্প রুই, কাতলা বা নিদেনপক্ষে ডায়মন্ডহারবার, মুম্বইয়ের ইলিশ দিয়েই কাজ চালাতে হবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী এবং গ্রাহকেরা।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)