• এসএসসির নিয়োগবিধি সংক্রান্ত মামলা খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২২ জুলাই ২০২৫
  • স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন বিধিতে হস্তক্ষেপ করেনি কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। কিন্তু শীর্ষ আদালতেও তাঁদের ধাক্কা খেতে হল। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট এই মামলা খারিজ করে দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, এই মামলার কোনও গ্রহণযোগ্যতাই নেই। কারণ আদালত কোথাও বলেনি, পুরনো বিধি মেনেই নিয়োগ করতে হবে। নিয়োগ বিধি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার কমিশনের আছে। মামলাকারীদের উদ্দেশে শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, ‘সুপ্রিম কোর্ট কি জুয়া খেলার জায়গা’। পাশাপাশি এদিন মামলাকারীদের আইনজীবীদেরও আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে।

    ২০১৬ সালের প্যানেলের প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মতো নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে এসএসসি। সেই বিধিতে বেশকিছু আপত্তি তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থী সহ চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, দ্রুত শূন্যপদ পূরণ করা না হলে আগামী দিনে আরও জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাই এসএসসির বিজ্ঞপ্তিতে হস্তক্ষেপ করা হবে না। হাইকোর্টের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

    সোমবার সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলাটি ওঠে। আবেদনকারীদের হয়ে এই মামলাটি আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিম লড়াই করেন। অন্যদিকে এসএসসির হয়ে লড়েন আইনজীবী কপিল সিব্বল ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এজলাসে বিচারপতি কুমার মন্তব্য করেন, আদালত কোথাও বলেনি আগের বিধি মেনেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার কথা বলা হয়েছে। এসএসসি একটি দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা। এই অবস্থায় নিয়োগ নিয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। শুনানির শুরুতে মামলাকারীদের উদ্দেশে বিচারপতি কুমার প্রশ্ন করেন, তাঁরা কারা? যোগ্য না অযোগ্য? ‘বঞ্চিত’দের যোগ্য বা অযোগ্য কোনও তালিকাতেই ফেলা যায়। এ বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারীরা নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হননি। তাই আদালত মনে করছে না এই মামলার কোনও গ্রহণযোগ্যতা আছে। এরপরই মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন আবেদন প্রত্যাহার করে নিতে চান। সেই কথা শুনে অসন্তুষ্ট হন বিচারপতি। কারণ মামলার শুনানি বেশ কিছুটা হয়ে গিয়েছে। এরপরই বিচারপতি জানিয়ে দেন, মামলা প্রত্যাহার নয়, খারিজ করা হচ্ছে।

    উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি কুমারও। সোমবার তিনি জানিয়েছেন, রায় ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতি তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। রায়ের সঙ্গে সহমত হয়েছিলেন সঞ্জয় কুমারও। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, মামলাকারীদের আবেদন মানতে পারা সম্ভব নয়।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)