বিজেপির দাবি, বাংলায় নাকি ১৭ লক্ষ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এবার এনিয়ে একুশের মঞ্চ থেকে পাল্টা বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, যেখানে রাষ্ট্রসংঘই বলছে, গোটা বিশ্বে রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লক্ষের আশপাশে, সেখানে একমাত্র বাংলাতেই ১৭ লক্ষ রোহিঙ্গা নাকি বসবাস করছেন। এটা কীভাবে সম্ভব?
বিজেপির এই বক্তব্যকে ‘কুৎসা’ ও ‘চরম বাঙালি-বিরোধী চক্রান্ত’ বলে উল্লেখ করেন মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, এটা শুধুই রাজনৈতিক মিথ্যাচার নয়, বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি ও পরিচয়ের উপরও সরাসরি আক্রমণ। তাঁর কথায়, বাংলা ভাষায় কথা বললেই গ্রেফতার! ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে! এটা কিসের রাজনীতি?
একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে শুধু পরিসংখ্যানেই নয়, রাজনৈতিক দায় নিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দেন কেন্দ্রকে। বলেন, অনুপ্রবেশ যদি হয়, তাহলে সীমান্ত কে পাহারা দিচ্ছে? বিএসএফ, যারা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন। তাহলে দায় তো পড়ছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপর, রাজ্য সরকারের নয়।
ভোটার তালিকা থেকে বাঙালি নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিহারে এসআইআর-এর প্রসঙ্গও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, গোপনে একটি নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি সন্দেহে ধরে নিয়ে গিয়ে তাকে এক মাস ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা যাবে। এর প্রতিবাদে সমস্ত বাংলাব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনের ডাকও দেন তিনি।
বাংলাভাষীদের উপর সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, আজ কে কী খাবে, কী বলবে সব বিজেপি ঠিক করে দিচ্ছে! বাংলা ভাষা কি বন্ধ করে দেবে ওরা? বাংলার ইতিহাস, নবজাগরণ, স্বাধীনতার আন্দোলনের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই মাটিই। দরকার হলে আবার ভাষা আন্দোলন শুরু হবে। তিনি বলেন, ‘বাংলার উপর আঘাত মানে দিল্লিতে লড়াই। আমি কাউকে ছেড়ে কথা বলব না।’