• ‘এবার শুরু হল ভাষা রক্ষার শপথ’, একুশের মঞ্চে বাঙালি অস্মিতায় শান মমতার
    প্রতিদিন | ২১ জুলাই ২০২৫
  • ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বাংলার আবেগ, বাঙালির গর্ব। এমন সোনাঝরা ভাষা আজ আক্রমণের মুখে! বাংলার বাইরে ‘মধুরতম’ ভাষায় কথা বললেই জুটছে ‘বাংলাদেশি’ তকমা। দেশের মানুষকে দেশছাড়া করার তোড়জোড় চলছে। এবং বেশিরভাগ ঘটনাই ঘটছে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে। মহারাষ্ট্র, কর্ণাটকে তো ভিনভাষীদের উপর সেসব রাজ্যের ভাষা বলার জন্য চাপ দেওয়ার ঘটনাও কম নয়। পরিস্থিতির গতিপ্রকৃতি দেখে মনে করা হচ্ছে, সমৃদ্ধশালী বাংলা ভাষাকে বাঁচাতে নতুন করে লড়াই শুরু প্রয়োজন। একুশে তৃণমূলের শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে ঠিক সেই আন্দোলনেরই ডাক দিলেন বাংলার মু্খ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    বাংলার জননেত্রীর কথায়, ”বাংলা ভাষার উপর চলছে বিশাল সন্ত্রাস। কে কোন ভাষায় কথা বলবে, কে কী খাবে, তা নিয়েও বলে দেবে ওরা! জেনে রাখবেন, এখানে সবার অধিকার রক্ষিত হবে।” প্রয়োজনে নতুন করে ভাষা আন্দোলনের কথাও বললেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর এখানেই আর পাঁচজন রাজনীতিবিদের চেয়ে নিজের পৃথক চরিত্র ফের প্রমাণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু বলেই ক্ষান্ত হলেন না। মাতৃভাষা রক্ষায় দলের জনপ্রতিনিধিদের নির্দিষ্ট কর্মসূচিও বেঁধে দিলেন। বিবিধের মাঝে মহান মিলনের বাংলায় সব ভাষাভাষীর মানুষকে নিয়ে শনি-রবিবার মিছিল, মিটিংয়ের কথা বললেন তিনি। মমতার কথায়, ”দলের সাংসদদের বলব, সমাজের বিশিষ্টজনেদের সঙ্গে নিয়ে ভাষা শহিদ উদ্যানে ধরনায় বসুন।” 

    আসলে বাংলা ও বাঙালির উচ্চ স্থান যুগে যুগে কালে কালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এসেছে ভারতের বুকে। একসময়ে মেধা আর শ্রেষ্ঠত্বের বিচারে বাঙালির সমাদর ছিল জগৎজোড়া। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই ছবিটা ম্লান হয়েছে। বাঙালির কদর কমেছে, বোধহয় ততোধিক বাংলা ভাষার। আর এ যে কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের ভাষা রাজনীতিরই অঙ্গ, সচেতন মানুষমাত্রই তা বুঝতে বাকি নেই। আর ভাষা যেখানে রাজনীতির অঙ্গ হয়ে উঠেছে, সেখানে বিনা যুদ্ধে কিছু ছাড়তে নারাজ রাজনীতিতে পোড় খাওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেকথা তিনি সোচ্চারেই উচ্চারণ করলেন। বললেন, ”একদম ছেড়ে দেবেন না। মনে রাখবেন, আমাদের রাজ্যে সকলে নিজের নিজের ভাষায় নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। আমরা সব ভাষাকে সমানভাবে সম্মান করি।” কিন্তু বাংলা ভাষা আর বাঙালির সম্মান পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করলেন বাংলার ‘দিদি’।
  • Link to this news (প্রতিদিন)