• জিলিংসেরেঙে মালতির ‘ফ্রি’ স্কুল ভাইরাল, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ৩৮ লক্ষ
    প্রতিদিন | ২১ জুলাই ২০২৫
  • সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: মালতিবালা বিদ্যালয়। আরেকটু পরিষ্কার করলে মালতির বিনা পয়সার স্কুল। সমাজমাধ্যমে পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডির জিলিংসেরেঙ গ্রামের বধূ মালতি মুর্মু এবং তার স্কুল ভাইরাল হতেই বিতর্ক তৈরি হয়। আসল সত্যটা কি, তা সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে দ্বিতীয়বার সেখানে গিয়ে ওই এলাকার সামগ্রিক বিষয়ে সঠিক তথ্য তুলে ধরে। সেই সঙ্গে একমাত্র সরকারি স্কুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেহাল দশা সামনে আনে। আর তারপরেই ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোল বদলাতে পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন থেকে ৩৮ লক্ষ টাকার বেশি অর্থ বরাদ্দ হয়। আহ্বান হয়ে যায় দরপত্রও।

    পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চারটি অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ সেই সঙ্গে শৌচাগার তৈরি হবে। বাগমুন্ডি ২ চক্রের অধীনে রয়েছে ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়। বাঘমুন্ডির বিডিও আর্য তা বলেন, “জিলিংসেরেঙ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চারটি অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ হবে। সেইসঙ্গে হবে শৌচালয়।’’ পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কাজে মোট বরাদ্দকৃত অর্থ ৩৮ লক্ষ ২০ হাজার ৮৮৪ টাকা। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৪৩। কিছুদিন ধরেই এই স্কুলে ছাত্রছাত্রী সেভাবে আসছিল না। শুধু বর্ষার মরশুম নয়, তার আগেও ২৫ থেকে ৩০ জনের বেশি ওই স্কুলমুখী হচ্ছিল না এলাকার পড়ুয়ারা। এর কারণ যে মালতির বিনা পয়সার স্কুল তা পরিষ্কার। ওই বেহাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কারণেই মালতির বিনা পয়সার স্কুলের জন্ম। সেটাও গ্রামবাসীরা একপ্রকার স্বীকার করে নেন। স্বীকার করে নেন ওই প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুল কর্তৃপক্ষ।

    কারণ, প্রত্যেকটি শ্রেণিকক্ষেই চাঙড় খসে পড়ছে। যে শ্রেণিকক্ষে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস হয় সেখানে অল্প বৃষ্টিতেই জল জমে যায়। শৌচাগার থাকলেও তার অবস্থা খারাপ। জল না থাকায় তা ব্যবহার করা যায় না। স্কুলের সদর দরজা বলে কিছু নেই। ফলে সাপ ঘুরতে থাকে। মিড ডে মিল যেখানে রান্না হয় বা জিনিসপত্র যেখানে রাখা থাকে তা একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। মিড ডে মিলের চাল তরকারি রাখার স্থলের জানালাই নেই। একেবারে খোলা। জানালা দিয়ে বৃষ্টি ঢুকে ওই ঘরেও জল জমে যায়। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনাদিকুমার টুডু বলেন, ‘‘এই সমস্যার কথা আমরা আগেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম।’’ মালতি মুর্মু ও তাঁর স্বামী বাঙ্কা মুর্মু বলেন, ‘‘খুব ভালো লাগছে যে সরকারি বিদ্যালয়টি দারুণভাবে সেজে উঠবে। আমরা চাই এভাবেই গ্রামের উন্নয়ন হোক। আর সেই উন্নয়নে শামিল হোক আমাদের বিদ্যালয়, মালতির বিনা পয়সার স্কুল।’’ মালতির স্কুল ভাইরালের পর ওই গ্রামে যান ঝালদার মহকুমাশাসক রাখি বিশ্বাস। সেদিনই তিনি এলাকার মানুষকে জানিয়েছিলেন, ওই বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। ওই বিদ্যালয়ে সৌরচালিত পানীয়জল প্রকল্প থাকলেও স্কুলের পয়েন্ট খারাপ। ফলে স্কুলে এসে পানীয় জলটুকু পর্যন্ত পায় না পড়ুয়ারা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)