২১ জুলাইয়ের জন্যই সচিত্র পরিচয়পত্র পেয়েছে গোটা ভারত
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২১ জুলাই ২০২৫
দেবাশিস কুমার, বিধায়ক ও কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ সদস্য
১৯৯৩ সালের সেই ঐতিহাসিক ২১ জুলাইয়ের আন্দোলনে থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। আমিও সেদিন রাস্তায় ছিলাম। সেদিন দেখেছিলাম, স্বাধীনতা-উত্তর ভারতের বুকে এক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ওপর কীভাবে বর্বরভাবে হামলা চালাতে পারে পুলিশ।
সচিত্র পরিচয়পত্র ছাড়া ভোট নয়। মানুষ তখন রাস্তায় নেমেছিল কেবলমাত্র এই একটা যুক্তিসঙ্গত দাবিতে। কোনও দলীয় হিংসা ছিল না, কোনও আগুন লাগানো ছিল না, ছিল না কোনও ভাঙচুর। ছিল শুধু একটা সোজা কথা, ভোট যেন স্বচ্ছ হয়, মানুষের রায় যেন বিকৃত না হয়। আর সেই দাবির জবাবে তৎকালীন রাজ্য সরকার যেভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল, তা বাংলার মানুষ চোখের সামনে দেখেছে।
সে দিনের পুলিশের আচরণ, সরকারি ব্যবস্থার কদর্য ভূমিকা, বাংলার রাস্তায় রক্ত ছড়িয়ে দিয়ে গিয়েছিল। নিরীহ মানুষের কণ্ঠরোধ করার সেই প্রচেষ্টা আজও আমাদের গায়ের লোম খাড়া করে দেয়। আমার শ্রদ্ধা ও স্যালুট জানাই তাঁদের, যাঁরা সেদিন প্রাণ দিয়েছিলেন। যাঁদের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়েই আজ কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, সোমনাথ থেকে সারনাথ—গোটা ভারতবর্ষের প্রতিটি নাগরিক সচিত্র পরিচয়পত্র পেয়েছেন। তাঁদের সেই বলিদানই ভারতের নির্বাচনী ব্যবস্থায় ঐতিহাসিক বদল এনেছিল।
২১ জুলাই শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশের গণতন্ত্রের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। আর যাঁরা তাঁদের জীবনের বিনিময়ে এই দিনটিকে অর্থবহ করে তুলেছেন, তাঁদের কাছে মাথা নত করে শ্রদ্ধা জানাই।