বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই উত্তরবঙ্গকে শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত করেছে বিজেপি। তবে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে সেই ঘাঁটিতে দাঁত ফুটিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে উত্তরবঙ্গে নিজেদের পায়ের তলার জমি আরও শক্ত করতে চায় ঘাসফুল শিবির। আর এই কারণে এখন তারা এনআরসির মতো ইস্যুকে হাতিয়ার করতে চাইছে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি অসমের ফরেন ট্রাইবুনাল এনআরসি নোটিশ পাঠিয়েছিল উত্তম ব্রজবাসী নামের এক রাজবংশীকে। এই নিয়ে অসমের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে তোপ দেগেছিল তৃণমূল। দিনহাটার সেই বাসিন্দা উত্তমকে এবার দেখা যাবে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে।
এর আগে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দাবি করেছিলেন, এই উত্তম ব্রজবাসীর অস্থায়ী ঠিকানা কোচবিহার তবে তিনি আসলে অসমের বাসিন্দা। এদিকে অসমের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, উত্তম ব্রজবাসী যে রাজবংশী, সেই পরিচয় ট্রাইবুনালে স্পষ্ট ভাবে পেশ করেননি তাঁর আইনজীবী। এর জেরেই এনআরসি তালিকা থেকে নাম বাদ পড়েছিল ব্রজবাসীর। এর আগে অবশ্য এনআরসি নোটিশ নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। এই নিয়ে চরম রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছিল। আর এই সবের মাঝেই একুশের মঞ্চ থেকে ছাব্বিশের সুর বাঁধতে উত্তম ব্রজবাসীকে হাতিয়ার করতে চাইবে তৃণমূল।
উল্লেখ্য, বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিনরাজ্যে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে আটক করার ঘটনার প্রতিবাদে গত ১৭ জুলাই মিছিল-সমাবেশ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই ভিনরাজ্যে বাঙালিদের হয়রানি নিয়ে সরব তৃণমূল কংগ্রেস। বাংলার শাসক দলের অভিযোগ, বাংলায় কথা বললেই নাকি বাংলাদেশি তকমা দেওয়া হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। তবে এর মধ্যে বহু মানুষের কাছ থেকে আধার কার্ড পাওয়া গেলেও জানা গিয়েছে, সেগুলি ভুয়ো বা ঘুরপথে বেআইনি ভাবে সেগুলি বানানো হয়েছে। এই নিয়ে রাজ্যে যখন রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে, তখন একুশের মঞ্চ থেকেও এই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরব হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই আবহে একুশের সমাবেশে এনআরসি নোটিশ পাওয়া উত্তম ব্রজবাসী তৃণমূলের বড় 'হাতিয়ার' হতে পারে।