মোদির সভায় দুর্গাপুরে খেলার মাঠের দফারফা, ক্ষুব্ধ ক্রীড়ামহল
প্রতিদিন | ১৯ জুলাই ২০২৫
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক সভার জন্যে দফারফা খেলার মাঠ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার দুর্গাপুরের নেহরু স্টেডিয়ামে দুটি সভায় অংশ নেন। একটি সরকারি সভা, অন্যটি রাজনৈতিক। সরকারি সভা থেকে রাজনৈতিক সভাতেই তিনি বেশি সময় ব্যয় করেন। কিন্তু ডিএসপির এই স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রীর সভা নিয়ে তাঁর আপত্তি আগেই জানিয়েছিল ক্রীড়ামহল। তার তোয়াক্কা না করেই মোদির সভা হয়।
ডিএসপির নেহরু স্টেডিয়ামে সাইকেল বেরসিংয়ের বিশেষ ট্র্যাক ‘ভেলোড্রাম’ বহু আগে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে অ্যাথলেটিকসের ৪০০ মিটার বিশেষ ট্র্যাক আছে। ক্রিকেট খেলার পিচ রয়েছে। এখানে একদা এয়ারলাইন্স কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা হত। ১৯৮৩-র বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দল এখানে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলেছে। ইন্টার স্টিল ফুটবল, ক্রিকেট প্রতিযোগিতা হত। ক্যামেরুনের বিশ্বকাপার রজার মিল্লাও এসেছিলেন এই মাঠে। সেই মাঠের ঘাস, মাটি তুলে বালি, পাথর ফেলে তৈরি হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর জনসভার মঞ্চ ও হ্যাঙ্গার। মাঠের জলনিকাশি ব্যবস্থার দফারফা করে প্রধানমন্ত্রীর আসার মসৃণ পথ বানানো হয়েছে। জনসভা আয়োজনের স্বার্থে সাত দিন ধরে প্রায় গোটা মাঠ জুড়ে দক্ষযজ্ঞ চলেছে। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে মাঠকে আগের চেহারায় ফেরাতে বছরখানেক লাগবে। বহু অ্যাথলিট, ফুটবল ও ক্রিকেট খেলোয়াড়রা এই মাঠে নিয়মিত অনুশীলন করেন। এমতাবস্থায় স্বভাবতই তাঁরা মুষড়ে পড়েছেন।
এই মাঠে প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে আসা তিরাশির বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেট দলের সদস্য তথা বর্তমানে বর্ধমান দুর্গাপুরের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ। তিনি বলেন, “এই কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও ক্রীড়ানীতি নেই। ক্রীড়াকে উন্নত করার চেয়ে এরা দেশের ক্রীড়ার ভবিষ্যৎ নষ্ট করতেই বেশি তৎপর। না হলে একটা আস্ত স্টেডিয়াম নষ্ট না করে অন্য মাঠে জনসভা করা যেত।” দুর্গাপুরের অন্যতম ক্রীড়া সংগঠক রণজিৎ গুহর আক্ষেপ, “খুব দুর্ভাগ্যের যে, আগেও একটা স্টেডিয়ামের মাঠ নাই করে রাজনৈতিক জনসভা হয়েছে। এখনও হচ্ছে। এখান থেকে বহু ক্রীড়া প্রতিভা উঠে এসেছে। এই ট্র্যাডিশন কবে বন্ধ হবে, সে আশায় রইলাম।” পরিবেশবিদরাও ক্ষুব্ধ। তাঁরা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক সভার জন্য একটা খেলার মাঠের দফারফা করা হল। প্রতিবাদে তাঁরা পথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।