বোর্ড গঠনের তিনদিনের মধ্যে চেয়ারম্যানের ইস্তফা, ভেস্তে গেল প্রথম বৈঠক
বর্তমান | ১৯ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: ছ’বছর বাদে বোর্ড গঠনের পর তমলুক টাউন কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটির প্রথম বোর্ড মিটিং ভেস্তে গেল। শুক্রবার বিকাল ৪টেয় ওই সোসাইটির বোর্ড মিটিং হবে বলে প্রত্যেক ডিরেক্টরের কাছে চিঠি পৌঁছে গিয়েছিল। যদিও শুক্রবার সেই মিটিং হয়নি। বোর্ডের চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ মহাপাত্র ইস্তফা দিয়েছেন। ওই অবস্থায় সোসাইটির অন্য পদাধিকারীরা ধন্দে পড়েছেন। তাই এদিনের মিটিং ভেস্তে গিয়েছে। সম্পাদক রমেন্দ্রনাথ মালাকার এনিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
তমলুক টাউন কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি নিয়ে এই মুহূর্তে রাজনৈতিক টানাপোড়েন তুঙ্গে। বোর্ডের ভবিষ্যৎ কী, তা নিয়ে আলোচনা চলছেই। কারণ, ১২ জুলাই বোর্ড গঠন হয়। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের পাঠানো প্যানেল চ্যালেঞ্জ করে ভোটাভুটির মাধ্যমে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। কিন্তু, দল এই বিষয়ে কড়া মনোভাব নিয়েছে। দলের নির্দেশে ১৬তারিখ চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বিশ্বনাথ মহাপাত্র। তিনি জেলা তৃণমূল সভাপতি সুজিত রায়কে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন। একইসঙ্গে বোর্ড অব ডিরেক্টরের উদ্দেশে চিঠি লিখে ইস্তফা দিয়েছেন। যদিও ওই সোসাইটির বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি, ট্রেজারার প্রমুখ নিজস্ব পদে আছেন। কিন্তু, তমলুক শহর সভাপতির ঘনিষ্ঠদের দাবি, বোর্ডের অন্য পদাধিকারীদেরও ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে ওই সোসাইটির বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে। মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার ছ’বছর বাদে তমলুক শহরের নাইট ব্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত ওই সোসাইটির নির্বাচন হয়। সেখানে বিজেপিকে হারিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস বোর্ড দখল করলেও কোন গোষ্ঠীর হাতে বোর্ডের রাশ থাকবে তানিয়ে সংঘাত তুঙ্গে। ১২জন ডিরেক্টরের মধ্যে আটজন শহর তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া বিরোধী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত। তাই তাঁরা দলের প্যানেলকে অগ্রাহ্য করে অনায়াসে ভোটাভুটির মাধ্যমে বোর্ড গঠন করেছিলেন। কিন্তু, দল এত তাড়াতাড়ি ইস্তফা দিতে নির্দেশ দেবে, এটা তাঁরা কেউই কল্পনা করতে পারেননি। যেকারণে এখন বোর্ডের ভবিষ্যত নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।
১৮ জুলাই পাঁচ দফা অ্যাজেন্ডাকে সামনে রেখে ওই সোসাইটির বোর্ডের মিটিং ডাকা হয়। সেই মিটিংয়ে দায়িত্ব হস্তান্তর হওয়ার কথা ছিল। অর্থাৎ, প্রশাসকের হাত থেকে বোর্ড দায়িত্বভার নিত। কিন্তু, চেয়ারম্যান ইস্তফা দেওয়ায় দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। সেইসঙ্গে সোসাইটির বোর্ডও আপাতত পঙ্গু হয়ে রইল। ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের পর এনিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গিয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কমিটির চেয়ারপার্সন দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, শুক্রবার পূর্বসূচি অনুযায়ী বোর্ডের মিটিং হয়নি। শহর তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া বলেন, বোর্ড মিটিংয়ের জন্য ডিরেক্টরদের চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু, এদিন মিটিং হয়নি।