• '২৭ হাজার লক্ষ কিউসেক মিটার জল ছেড়েছে ডিভিসি', বন্যার আশঙ্কায় নবান্নে বৈঠক মমতার, ত্রাণ নিয়ে বড় নির্দেশ
    আজকাল | ১৬ জুলাই ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: একটানা প্রবল বৃষ্টিতে টালমাটাল একাধিক জেলা। গত সপ্তাহান্তে দু'দিন রোদের দেখা পাওয়া গেলেও, চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই আবারও প্রবল বৃষ্টি শুরু। জলমগ্ন বহু জেলা। বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কায় এবার ডিভিসিকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। 

    আজ, মঙ্গলবার রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের বৈঠকে ডিভিসির বিরুদ্ধে একগুচ্ছ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই লক্ষ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ছে ডিভিসি। এর জেরেই প্লাবিত বিস্তীর্ণ এলাকা। ভারী বৃষ্টির জেরে পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। 

    আজকের বৈঠকে আবারও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তিনি চিঠি লিখেছিলেন। কিন্তু তারপরেও কাজ হয়নি। এদিকে ডিভিসি একনাগাড়ে জল ছাড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ত্রাণ শিবির, বাড়তি খাবারের ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হল জেলাশাসকদের। 

    মঙ্গলবারের নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বক্তব্য, 'জুনের ১৮ তারিখ থেকে ইচ্ছে মতো জল ছাড়ছে ডিভিসি। রাজ্যের কথায় গুরুত্ব দিচ্ছে না। ইতিমধ্যেই ২৭ হাজার লক্ষ কিউসেক মিটার জল ছাড়া হয়েছে। অতি বৃষ্টির ফলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখার পরেও কাজ হয়নি। ডিভিসি জল ছাড়ছে, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখুন জেলাশাসকরা। নিচু এলাকার মানুষদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরান। জেলাশাসকদের পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রাখার নির্দেশ দিচ্ছি। প্লাবিত এলাকার নজরদারিতে তিনজন করে সচিব থাকবেন। ত্রাণ শিবিরে যেন খাবারের অভাব না থাকে। নজরদারির জন্য বিশেষ টিম তৈরি করতে হবে।দুর্গত এলাকাগুলিতে ওষুধ পাঠাবে স্বাস্থ্যদপ্তর।' 

    আরও পড়ুন: 'আর পারছি না', ঋণের পাহাড় নিয়ে মানসিক চাপ, মা, পোষ্যদের মেরে যুবক যা করলেন

    মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'দ্রুত ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান রূপায়ণের চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান হলে মানুষ উপকৃত হবেন। ডিএম, এসপি-দের সতর্ক থাকতে হবে এখন। ২৮ লক্ষ পাকা বাড়ি করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। সবটার খরচ দেবে রাজ্য সরকার। বিদ্যুৎ দপ্তরকে সতর্ক থাকতে হবে। গ্রামের রাস্তা দিয়ে ভারী গাড়ির যাতায়াত বন্ধ করতে হবে। পুলিশ ও প্রশাসন নজর রাখুন। বর্ষার জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা রুখতে যথাযথ সতর্কতামূলক প্রচার করতে হবে‌। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে কাজে লাগাতে হবে।' 

    এর পাশাপাশি বিরোধী দলের রাজনীতিকদের উদ্দেশেও বার্তা দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, 'সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের অনুরোধ করছি, এই সময় রাজ্য সরকারকে কাজে সাহায্য করুন। দয়া করে, কাজে বাধা দেবেন না। আশা করছি, আপনারা সহযোগিতা করবেন‌।' 

    এদিকে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার থেকে ১৭ জুলাই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের ১৫ জেলায় প্রবল বৃষ্টির হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তালিকায় রয়েছে, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, দুই ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, নদিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ। আজ ও আগামিকাল দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। টানা বর্ষণে শাক-সবজির ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। বেশকিছু জায়গা জলমগ্ন হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। অন্যদিকে উপকূলের দুর্যোগের কারণে আগামী পাঁচদিন মৎসজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)