বাবার সহকারী হিসাবে কাজ করেছেন, তবু কেন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ পাচ্ছেন না মেঘলা দাশগুপ্ত?
আনন্দবাজার | ১৬ জুলাই ২০২৫
অভিনয়ে হাতেখড়ি অঞ্জন দত্তের ‘বো ব্যারাকস’ ছবির মাধ্যমে। তখন সাড়ে তিন বছর বয়স। যদিও দর্শকের নজরে পড়েন কিশোরী বেলায়। ‘লোডশেডিং’ ছবির মাধ্যমে।
তিনি মেঘলা দাশগুপ্ত। তারকা পরিবারের সন্তান যদিও নিজেকে তারকা-কন্যা মানতে নারাজ। ফিল্মি ব্যাকগ্রাউন্ডে বড় হয়ে ওঠা মা অভিনেত্রী বিদীপ্তা চক্রবর্তী এবং বাবা পরিচালক বিরসা দাশগুপ্ত। ঠাকুরমা ঠাকুরদা থেকে মাসি-মেসো সবাই বিনোদন জগতের মানুষ। যদিও মেঘলা মনে করে ‘নেপো কিড’ কথাটাই তাঁর সঙ্গে বড্ড বেমানান।
কিশোরী মেঘলা এখন বছর ২৪-এর নারী। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পারর্ফমিং আর্ট নিয়ে স্নাতক করেছেন। যদিও স্নাতকোত্তরের ইচ্ছে নেই। পায়ের তলার জমি শক্ত করতে চাইছেন মেঘলা। এমনিতেই ইন্ডাস্ট্রিতে লোকে সবটা গোপন করে রাখতে ভালবাসেন। কিন্তু মেঘলা ব্যাতিক্রমী। নিজের প্রেমিককে কখনও লুকোননি। সম্প্রতি তাঁর জন্মদিনে ভালবাসায় ভরা পোস্টও দেন। তবে এটাকে ‘সাহসে’র তকমা দিতে নারাজ। বরং বাবা-মাকে কৃতিত্ব দিতে চেয়েছেন এমন সৎ ভাবে মানুষ করে তোলার জন্য।
বাবা-মা খ্যাতনামী। যদিও তিনি সমসাময়িক তারকা-সন্তানদের তুলনায় কাজের বহরের দিকে একটু হলেও পিছিয়ে, মানছেন মেঘলা নিজেও। তাঁর কথায়, ‘‘অভিনয়ের কাজ খুব যে আসছে তেমন নয়। যেমন আসছে করছি। গত তিন বছর ধরে একটা ডকু-ফিকশনের প্রযোজনার দায়িত্ব নিয়েছি। আমার তো অভিনয় করার পরিকল্পনাই রয়েছে সব সময়। কিন্তু কেন কম কাজ আসছে জানি না। আমি এই পেশার মানুষদের বলেছি, কাজ করতে চাই। আসলে ছোট থেকেই অভিনয় করছি। যদিও ‘লোডশেডিং’র পরে বোর্ডের পরীক্ষা ছিল। সেই সময় অবশ্য বাবার সহকারী হিসেবে টানা কয়েক বছর কাজ করি বলে অনেকে মনে করেছেন মেঘলা হয়তো ক্যামেরার পিছনেই কাজ করে।’’
এমন পারিবারিক খ্যাতি, পরিচিত থাকলে নাকি বলিউডে সহজেই কাজ পাওয়া যায়। কিন্তু, সেখানে মেঘলার কণ্ঠে যেন উলটপূরাণ। বাবা-মা একটা দিশা দেখিয়েছেন, মানেন বিদিপ্তা-কন্যা। কিন্তু কাজ পাইয়ে দিয়েছেন এমনটা নয়। মেঘলার কথায়, ‘‘আমাকে কখনও তারকা-কন্যার মতো বড় করে তোলা হয়নি। ওঁদের কাজের জন্য ওঁরা প্রচারের আলো পেয়েছেন। আমাকে কখনও এটা মনে করতে দেননি, আমি বিশেষ কেউ। তার জন্য কৃতজ্ঞ। আর মা-বাবা কাজ পাইয়ে দিলে কুন্ঠাবোধ হবে। কারণ, এটা আমার আত্মসম্মানের ব্যাপার। এটার পরেও লোকে বলবে, ও যে পরিবারের মেয়ে, কাজ পাওয়ারই তো কথা। আমি জানি কতটা কষ্ট করছি। লোকের মুখ তো বন্ধ করা যায় না।’’
অভিনেতা শ্রমণ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজের বাইরে একটা সুন্দর সম্পর্ক রয়েছে মেঘলার। পায়ের তলার মাটি শক্ত করার আগেই প্রেমিককে প্রকাশ্যে নিয়ে আসার ফলস্বরূপ অনুরাগী কিংবা অনুসরণকারীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় ভয় পান না। মেঘলার কথায়,‘‘আমরা ছ’বছর ধরে সম্পর্কটাতে আছি। আমি মানুষটা এমন নই যে আমার রোজকার জীবন সমাজমাধ্যমে দেব। বিশেষ দিনগুলোতে বিশেষ কিছু লিখি। আমরা একসঙ্গে ভাল আছি। সিনেমা দু’জনেরই আগ্রহের জায়গা। আর বেশির ভাগ সময় আমাদের কথা হয় অভিনয় ক্ষেত্রে কী ভাবে আরও ভাল করতে পারি সেটা নিয়ে। আর আমি বাবা-মায়ের থেকে কোনও কিছু লুকিয়ে রাখাতে বিশ্বাসী নই। এমন কোনও বিষয় নেই, যেটা নিয়ে আমি মা-বাবার সঙ্গে কথা বলতে পারব না।’’