• বাংলার আবেগ সংসদেও, বোঝাল জয়হিন্দের ধর্না
    আনন্দবাজার | ১৬ জুলাই ২০২৫
  • রাত পোহালেই বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি হিসেবে দাগিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে পথে নামবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী বছর বিধানসভা ভোটের আগে যেমন রাজ্যে বাংলা ভাষাকে ঘিরে আবেগকে প্রচারের হাতিয়ার করা হবে, তেমনই নয়াদিল্লিতে আসন্ন বাদল অধিবেশনেও সেই পথে হাঁটবে তৃণমূল। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যে, যেখানে বাংলাভাষী পরিযায়ীশ্রমিকদের হেনস্থা করা হচ্ছে, সেখানেও ছুটে যাবেন তৃণমূলের নেতারা— এমন পরিকল্পনা রয়েছে। গত চব্বিশ ঘণ্টা লাগাতার দিল্লির জয়হিন্দ কলোনিতে তৃণমূলের ধর্না থেকে যার সূচনা হল।

    সোমবার বিকেল তিনটে থেকে ধর্না অবস্থান আজ বিকেলে শেষ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য সুখেন্দুশেখর রায়, দোলা সেন, সাগরিকা ঘোষ ও সাকেত গোখলে। আজ সকাল সাতটার সময় সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। নরেন্দ্র মোদী এবং তাঁর বাহিনী যে ‘বাংলা ভাষার শত্রু’, এই ভাষ্যটিকেই সামনে নিয়ে আসার প্রয়াস দিল্লি থেকে শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। দলের সমাজ মাধ্যমের হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, ‘মোদীর ভারতে বাংলায় কথা বলা একটা অপরাধ হিসাবে গণ্য হচ্ছে। আইনসিদ্ধ নথি, পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও বসন্তকুঞ্জের জয়হিন্দ কলোনির বাংলা বলা বাসিন্দাদের হেনস্থা, অপমান করা হচ্ছে। তাঁদের বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হিসাবে দাগিয়েদেওয়া হচ্ছে।’

    গত রাতে ছিলেন দোলা সেন, সাকেতরা। দোলার বক্তব্য, “বাংলায় বিজেপি-র রাজনৈতিক ব্যর্থতার দাম দিতে হচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা পশ্চিমবঙ্গের বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের। সাগরিকা ঘোষের কথায়, “আমরা এখানে এসে এই মানুষেরা কী ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন, তা দেখছি। এঁদের ঠিকমতো রাস্তা নেই, বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে, জলের জোগান নেই।” পাশে বসা এক বয়স্ক মহিলাকে দেখিয়ে সাগরিকা বলেন, “বার বার পুলিশ এঁদের কাউকে না কাউকে থানায় ডেকে পাঠাচ্ছে। হেনস্থা করা হচ্ছে। তাঁদের বাবা-ঠাকুরদা পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে, না দিতে পারলেবাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” সাগরিকার কথায়, “এঁরা সবাই ভারতীয় নাগরিক। এঁদের কাছে নথি পরিচয়পত্র রয়েছে, আমরা গত একদিন ধরে সে সব দেখেছি। এক জনও বাংলাদেশি রোহিঙ্গানেই এখানে।”

    অন্য দিকে, সিপিআই (এমএল)-এর একটি প্রতিনিধিদল আজ জয়হিন্দ কলোনিতে যায়। সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। ওই কলোনির পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে দলের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘আট দিন হয়ে গেল, গোটা বস্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। গর্ভবতী মহিলা, শিশু, অসুস্থ এবং বৃদ্ধ মানুষজন অসহনীয় জীবন কাটাচ্ছেন। এই প্রবল গরমে একটি পাখাও তাঁদের কাছে নেই।’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)