ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু পুরুলিয়ার তিন বাসিন্দার! বৃষ্টিতে বাড়ি ধসে গুরুতর জখম আরও তিন, চাঞ্চল্য
আনন্দবাজার | ১৬ জুলাই ২০২৫
মাটির বাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হল তিন জনের। গুরুতর জখম হয়েছেন আরও ৩ জন। মঙ্গলবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়া-১ ব্লকের রামাইগোড়া গ্রামের অদূরে। পরে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসতেই টামনা থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে বাড়ির ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে মৃত এবং আহতদের উদ্ধার করে। আহতদের পুরুলিয়া সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। একজন বাদে মৃত এবং আহতেরা সকলেই শবর সম্প্রদায়ের মানুষ বলে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, পুরুলিয়ার রামাইগোড়া গ্রামে একসময় বসবাস ছিল দোলুই শবরের পরিবারের। বছর দশেক আগে দোলুই শবরের পরিবার গ্রাম ছেড়ে উঠে যায় বেশ কিছুটা দূরে একটি ফাঁকা জায়গায়। সেখানে মাটির দেওয়ালের উপর পোড়া মাটির টালির চালা তৈরি করে থাকতেন ওঝার কাজ করা দোলুই এবং তাঁর পরিবারের সকলে। বেশ কিছু দিন ধরে ওই বাড়িতে এসে থাকছিলেন দোলুইয়ের আত্মীয়া রিমঝিম শবর এবং রানিগঞ্জে একটি ইটভাটায় মুন্সির কাজ করা অমিত তাঁতি।
সোমবার রাতে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। বাড়ির বাইরে গ্রামের প্রায় কেউই বেরোননি। সকালে স্থানীয়েরা চাষের কাজে যাওয়ার সময় দেখেন, দোলুইদের মাটির বাড়ি পুরোপুরি ধসে পড়েছে। বাড়ির কাছে গিয়ে তাঁরা দেখেন, অমিত ও রিমঝিম-সহ দোলুইয়ের পরিবারের অন্যান্য সদস্য ওই ধ্বংসাবশেষের তলায় চাপা পড়ে আছেন। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় থানায়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে চাকলতোড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং পরে পুরুলিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান আহতদের। পরে ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে উদ্ধার করা হয় নিয়তি শবর, রিমঝিম এবং অমিতের দেহ। মনে করা হচ্ছে, রাতে যখন সকলে ঘুমিয়েছিলেন, তখনই বাড়িটি ধসে পড়ে।
মঙ্গলবার দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো ও পুরুলিয়া সদরের মহকুমা শাসক উৎপল ঘোষ। ছিলেন জেলার পুলিশ আধিকারিকেরাও। নিবেদিতা বলেন, ‘‘পরিবারটি লোকালয় থেকে বেশ কিছুটা দূরে একটি ফাঁকা জায়গায় বাড়ি তৈরি করেছিল। তার ফলে বাড়িটি ধসে পড়লেও প্রশাসন সময় মতো খবর পায়নি। উদ্ধারকাজে দেরি হয়েছে। আমরা হাসপাতালে আহত তিন জনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তাঁদের প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এই পরিবার যখন গ্রামে বসবাস করত, তখন সরকারি আবাস যোজনায় তাদের বাড়ি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই বাড়ি ছেড়ে পরিবারটি ফাঁকা জায়গায় এসে মাটির বাড়ি তৈরি করে বসবাস করেছিল।’’