মিল্টন সেন, হুগলি: আলাপ হয়েছিল ম্যাট্রিমনি। কথাবার্তা এগোতেই বিয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তরুণী। আলাপ, পরিচয়ের পর কিছুদিন আরও মেলামেশা করেন। এরপর ঠিক হয়, শীঘ্রই বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন। তার আগেই ঘটল বিপত্তি। বিয়ের স্বপ্ন চুরমার হল তরুণীর। পাশাপাশি খোয়ালেন লক্ষ লক্ষ টাকাও।
বড়সড় সাইবার প্রতারণার শিকার হলেন হুগলির এক তরুণী। ম্যাট্রিমনি সাইটে ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়েছিল এক যুবক। তার সঙ্গেই বিয়ের কথা চলছিল। মাঝপথে তরুণীর পরিবারের থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে গায়েব সে। মাথায় হাত গোটা পরিবারের। টাকার অঙ্ক শুনে চমকে উঠেছে পুলিশও।
ম্যাট্রিমনি সাইটে ওই যুবক ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। বিয়ের কথাবার্তা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতানোর পরিকল্পনাও ছিল। এই কাজে তাকে সাহায্য করেছে আরও একাধিকজন। লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে মূল অভিযুক্ত পলাতক। বর্তমানে পুলিশের জালে দুইজন। তরুণীর পরিবারের অভিযোগ শুনে পুলিশ যেমন চমকে উঠেছে, তেমনি এলাকায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।
আরও পড়ুন: রাস্তার এ কী দশা! পাত্রীর বেনারসি কাদায় মাখামাখি, গ্রামবাসীদের কাঁধে চাপলেন পাত্র, বিরক্ত হয়ে বিয়ের আসরেই গেল না বরযাত্রী
ম্যাট্রিমনি সাইটে ফেক আইডি বানিয়ে ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে বড়সড় প্রতারণা। ৪২ লক্ষ টাকা প্রতারণার শিকার হলেন হুগলির এক তরুণী। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার দুইজন। এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে অভিযুক্ত অভিষেক রায়ের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের দেওঘর। কলকাতার গড়িয়া এলাকায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে তার। ধৃত অন্যজন অভিযুক্ত জাহির আব্বাসের বাড়ি হুগলির খানকুলে। ম্যাট্রিমনি সাইটে এই ধরনের প্ৰতারণা হুগলিতে প্রথম, দাবি করেছে পুলিশের।
এদিন হুগলি সাইবার ক্রাইম থানায় সাংবাদিক বৈঠক করেন হুগলি গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার। তিনি জানান, গত ২৬ মে হুগলির সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এক তরুণী। ম্যাট্রিমনি সাইটে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পরিচয় হয় হুগলির ওই তরুণীর। সম্পর্ক পরিণতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যান ওই তরুণী ও তাঁর পরিবার।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ওই ব্যবসায়ী তরুণীকে জানায়, তার চালের ব্যবসায় জিএসটি সংক্রান্ত বিষয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকার প্রয়োজন। এরপর ধাপে ধাপে মোট পাঁচটি অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় ওই প্রতারক।
হুগলির সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের হতেই তদন্তে নামে পুলিশ। প্রতারণায় যুক্ত দু'জনকে এক সপ্তাহ আগে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন, একাধিক এটিএম কার্ড এবং ব্যাঙ্কের পাস বই। পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে নগদ ছয় লক্ষ টাকা। মূল অভিযুক্ত কে জালে আনতে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের ম্যানেজার হিসাবে তরুণী ও তাঁর পরিবারকে পরিচয় দিয়েছিল ওই প্রতারক। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর অভিযুক্ত তার ম্যাট্রিমনি প্রোফাইলটি ডিলিট করে দেয়। তার খোঁজ চলছে। সঙ্গে আর কে কে যুক্ত তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় মামলা রুজু করে তদন্ত জারি রেখেছে তারা।