• বৃষ্টি মাথায় পথে কংগ্রেস, পুলিশকে প্রশ্ন বামেরও
    আনন্দবাজার | ১১ জুলাই ২০২৫
  • আকাশভাঙা বৃষ্টি মাথায় করে পথে বসে থেকে পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিল কংগ্রেস। ধর্মঘটের দিনে পুলিশের আচরণের প্রতিবাদে সরব হল সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই-ও। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বিরোধীদের এই বিক্ষোভকে কটাক্ষ করেছে।

    রাজ্যে নারী নির্যাতনের ঘটনা এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ‘লালবাজার অভিযানে’র ডাক দিয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেস। কলেজ স্কোয়ারে বিদ্যাসাগর মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে মিছিল শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণ পরেই নেমেছিল প্রবল বৃ্ষ্টি। তার মধ্যেই মিছিল বৌবাজারের ফিয়ার্স লেনের মুখে পৌঁছলে ব্যারিকেড করে আটকে দেয় পুলিশ। কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে উত্তেজনা তৈরি হয়। এরই মধ্যে পুলিশের দিকে ডিম ছোড়া হয়। রাস্তায় অবস্থানে বসেন বিক্ষোভকারীরা। বৃষ্টির মধ্যেও এ দিন কংগ্রেসের জমায়েত হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার, প্রাক্তন সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে প্রদেশ স্তরের প্রায় সব নেতা, শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব এবং একাধিক জেলা কংগ্রেস সভাপতি উপস্থিত ছিলেন। নারী সুরক্ষার দাবিতে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন মহিলারাও।

    কলকাতা পুলিশের নগরপালের সঙ্গে দেখা করে দাবিপত্র দিতে চেয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। পুলিশ অবশ্য সেই সুযোগ দেয়নি। অবস্থান-স্থল থেকেই কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর বলেছেন, ‘‘মোদী ও মমতার সেটিং চলছে। তাই আর জি কর-কাণ্ডে পুলিশ যা বলছে, সিবিআই-ও একই রিপোর্ট দিয়েছে। একটা মেডিক্যাল কলেজের পরে আইন কলেজে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে গেল, প্রশাসনের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই।’’ সব কলেজে পরিচালন সমিতি ভেঙে দিয়ে শিক্ষা-ব্যক্তিত্বদের দিয়ে কমিটি করার দাবিও তুলেছেন প্রদেশ সভাপতি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘পুরো শিক্ষা রসাতলে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী থেকে পুরো দফতর জেলে। কিন্তু শিক্ষা নিচ্ছে না সরকার। শিক্ষা জগতের লোক থাকুন, শুধু তৃণমূল করেন বলেই পরিচালন সমিতিতে থাকতে হবে?’’ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘মিছিলে লোকের চেয়ে পুলিশ বেশি ছিল! কংগ্রেস বলে কিছু নেই, সিপিএমের সঙ্গে জোট করে দলটা উঠে গিয়েছে!’’

    সাধারণ ধর্মঘটের দিন, বুধবার কলেজ স্ট্রিটে মিছিল ঘিরে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময়ে জোড়াসাঁকো থানার ওসি-কে চড় মারার অভিযোগে এসএফআইয়ের কলকাতা জেলা সভানেত্রী বর্ণনা মুখোপাধ্যায়কে এ দিন থানায় তলব করা হয়েছিল। কতর্ব্যরত সরকারি কর্মীকে বাধা দেওয়া-সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বর্ণনা অবশ্য পুলিশের ডাকে হাজিরা দেননি। এসএফআই বুধবারের ওই ঘটনার ভিডিয়ো দেখিয়ে বরং দাবি করেছে, মহিলা পুলিশ ছাড়াই মহিলা বিক্ষোভকারীদের ‘নির্যাতন’ করেছে পুলিশ। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবাঞ্জন দে-র বক্তব্য, ‘‘যার নামে অভিযোগ, তার সঙ্গেই অসভ্য আচরণ করা হয়েছে। পুরুষ পুলিশ কর্মীরা কি এক জন মহিলাকে গ্রেফতার করতে পারে?’’ ধর্মঘটের দিনে যাদবপুরে মিছিল ও পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির জেরে এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য-সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা দেওয়ার প্রতিবাদে এ দিন সন্ধ্যায় ওই এলাকাতেই মিছিলের ডাক দিয়েছিল সিপিএম। সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়, বিকাশ ভট্টাচার্য, রতন বাগচী, সৃজন, প্রতীক-উর রহমানদের উপস্থিতিতে প্রতিবাদ মিছিলেও চোখে পড়ার মতো ভিড় ছিল।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)