মুক্তমনা প্রগতিশীল মুসলিমদের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ‘‘আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন বাঙালি হিন্দুর মতোই মুক্তিমনা প্রগতিশীল মুসলিমদের অস্তিত্ব রক্ষার শেষ লড়াই।’’ তবে শমীকের দাবি, বাংলার যা পরিস্থিতি তাতে সংখ্যালঘু ভোট ছাড়াই আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জিততে পারবে।
রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে আজই প্রথম দিল্লিতে এসেছেন শমীক। দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটি বৈঠকে যোগ দেন তিনি। পরে সন্ধ্যায় দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুনীল বনসলের সঙ্গে দেখা করেন। আগামিকাল সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে তাঁর। দায়িত্ব প্রাপ্তির পরে এটিই নড্ডার সঙ্গে প্রথম বৈঠক হবে শমীকের। সূত্রের মতে, দলীয় পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে আগামী দিনে বিধানসভা ভোটের কৌশল স্থির করাই তাঁর দিল্লি সফরের কারণ।
তিনি সভাপতি হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে, বসে যাওয়া কর্মীরা ফের মাঠে নেমেছেন বলে হাওয়া তৈরির চেষ্টা শুরু হয়েছে বিজেপিতে। শমীক অবশ্য বলেন, ‘‘খাদের কিনারায় যাওয়া তৃণমূল সরকারকে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত। আমাদের কর্মীরা তৈরি। এমনকি, বামপন্থী মনোভাবের লোকেদের একাংশ বিজেপির হয়ে সওয়াল করছে। যার অন্যতম কারণ তৃণমূলের সংখ্যালঘু তোষণ।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তৃণমূল যদি মনে করে সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে বলে তারা জিতবে, তা হলে বিজেপি নেতা হিসেবে আমি বলতে পারি, সংখ্যালঘু সমাজের সমর্থন ছাড়াই বিজেপি ক্ষমতায় আসতে চলেছে।’’ মুক্তমনা মুসলিমদের বিজেপির সমর্থনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে শমীক বলেন, ‘‘আপনারা ভেবে দেখুন, ১৫ বছর আগে আপনারা কোথায় ছিলেন, আজ কোথায়। কোথায় যেতে পারতেন!’’
তবে নতুন দায়িত্ব পেয়ে দিলীপকে কাছে টেনে শমীক যে দূরত্ব মোছার চেষ্টা করেছিলেন, তার ফল হয়েছে উল্টো! মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে দিলীপের মন্তব্যে রাজ্য বিজেপির বড় অংশ এখন ক্ষুব্ধ। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য দিলীপকে নিয়ে প্রশ্নে এ দিন বলেন, “আমি এই বিষয়ে চর্চায় থাকি না। মন্তব্য করব না।” রাজ্য নেতৃত্বের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘মমতা-শুভেন্দেুর মধ্যে কে অভিযুক্ত আর কে নয়— এ সব নিয়ে উনি বোধহয় মন্তব্য না করলেই ভাল করতেন। এতে অযথা বিতর্ক শুরু হয়েছে। যা মোটেই কাম্য নয়।’’ আজ শমীক ভট্টাচার্য ও দিলীপ ঘোষ কার্যত একই সময়ে সংসদ ভবনে থাকলেও, দু’জনের দেখা হয়নি।
পাশাপাশি, দিলীপ ফের খড়গপুর সদর আসনে লড়ার ইচ্ছার ইঙ্গিত দিতে শুরু করায় বিজেপির পরিষদীয় দলেও জটিলতা তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, এতে ক্ষুব্ধ শুভেন্দু। খড়গপুর সদর এলাকার বিজেপি কর্মীদের একাংশও এই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। ওই কেন্দ্রের বর্তমান বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, দল তাঁকে যা বলবে, তিনি সেটাই মেনে চলবেন। বিজেপি দল এবং খড়গপুর সদরের মানুষের প্রতিই তাঁর ‘আনুগত্য’। বিধায়কের বক্তব্যকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। দিলীপ এর আগে বলেন, ২১শে জুলাই ‘চমক’ থাকবে। খড়গপুরে সেই ‘চমক’ সভার আয়োজন করছেন জেলা বিজেপির পদাধিকারীরাই।