• রাস্তা ডুবে গিয়েছে, ভেসেছে সেতুও! টানা বৃষ্টিতে প্রায় সব নদীরই জলস্তর বেড়ে বন্যার আশঙ্কা বাঁকুড়ায়
    আনন্দবাজার | ১০ জুলাই ২০২৫
  • লাগাতার বৃষ্টিতে আবার বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হল বাঁকুড়ায়। ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন জায়গায় সেতু, কজওয়ে ও রাস্তাঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়ায় যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। দুকূল ছাপিয়ে বইছে জেলার গন্ধেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর, শিলাবতী, কংসাবতী, ভৈরোবাঁকি ও শালী নদী। এতেই আবার বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা করছেন সাধারণ মানুষ।

    জুনের মাঝামাঝি বর্ষার শুরুতেই নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টিতে বানভাসি হয়েছিল বাঁকুড়ার বিভিন্ন এলাকা। তার পর এক মাস যেতে না যেতেই জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে ফের বানভাসি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হল। রবিবার রাত থেকে বাঁকুড়ায় লাগাতার বৃষ্টিতে জলস্তর বেড়েছে বেশ কয়েকটি নদীর। প্রায় প্রতিটি নদীর জলই বইছে বিপদসীমা ছুঁয়ে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দ্বারকেশ্বর নদের জলস্তর দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় একাধিক কজওয়ে সম্পূর্ণ ডুবে গিয়েছে। বাঁকুড়া শহর লাগোয়া মীনাপুর কজওয়ে, কেঞ্জাকুড়ার কাছে সঞ্জীবনীঘাটের কজওয়ে ও ভাদুল কজওয়ের ধারে থাকা সীমানা নির্দেশক খুঁটিগুলিও পুরোপুরি জলের তলায় চলে গিয়েছে। ফুঁসছে শালী নদীও। বাঁকুড়ার সোনামুখীর কাছে শালী নদী বইছে দুকূল ছাপিয়ে। শালী নদীর জলে বৃহস্পতিবার প্লাবিত হয় সোনামুখী ব্লকের ধানসিমলা থেকে কাশীপুর যাওয়ার সড়ক। সড়কের উপর কোথাও এক কোমর, আবার কোথাও হাঁটুসমান উচ্চতায় নদীর জল বইতে থাকায় সড়কপথে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে ব্লক সদরশহর সোনামুখীর সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ওই ব্লকের শ্যামনগর, কুণ্ডপুষ্করিণী ও কাশীপুর-সহ প্রায় চার-পাঁচটি গ্রাম।

    বোদাই নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় পাত্রসায়ের ব্লকের রামপুরের কাছে ভেসে গিয়েছে ভাসাপুল। ফলে পাত্রসায়ের ব্লকের নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ওই পঞ্চায়েতের বারাসত, রামপুর নতুন বাজার, কাঁঠালঘাটা, মুড়েপাড়া, দেউলপাড়া-সহ আট-দশটি গ্রামের। স্থানীয়দের দাবি, বোদাইয়ের জলে এখন ভাসাপুল ভেসেছে। এর পরেও বৃষ্টি হলে সে ক্ষেত্রে নদীগর্ভ উপচে আশপাশের গ্রামে জল ঢুকবে। তবে স্বস্তির বিষয় হল, আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের উপর যে নিম্নচাপ ছিল, তা এখন ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে গিয়েছে। ফলে বৃষ্টির পরিমাণও এ বার ধীরে ধীরে কমে যাবে।

    লাগাতার বৃষ্টির মাঝেই যে কোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। দুর্যোগ চলাকালীন প্রতিটি ব্লক প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী মজুত রাখার পাশাপাশি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)