কাঞ্চনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানানোর দাবি! ডিরেক্টরের কাছে স্মারকলিপি জমা দিচ্ছে ট্রপিক্যালের চিকিৎসকদের সংগঠন
আনন্দবাজার | ১০ জুলাই ২০২৫
কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে কর্তব্যরত চিকিৎসকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে অভিনেতা তথা তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক এবং তাঁর স্ত্রী শ্রীময়ী মল্লিকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় দু’জনের বিরুদ্ধে বড়বাজার থানায় সরকারি ভাবে অভিযোগ জানানোর দাবি তুলেছে ওই হাসপাতালে চিকিৎসকদের সংগঠন (রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন বা আরডিএ)। এই নিয়ে বৃহস্পতিবার ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ডিরেক্টরের কাছে স্মারকলিপি (ডেপুটেশন) দিতে চলেছে তারা। এই আবহে বৃহস্পতিবার হাসপাতালে গিয়ে ডিরেক্টরের সঙ্গে দেখা করেন মেডিক্যাল কলেজের ইন চার্জ (পুলিশ আধিকারিক)।
চিকিৎসকেরা স্মারকলিপিতে জানিয়েছেন, বুধবার, ৯ জুলাই ট্রপিক্যাল মেডিসিনের আউটডোরে এক চিকিৎসককে হেনস্থা করা হয়। আর তা করেছেন এক জন জনপ্রতিনিধি। ওপিডিতে এক গুরুতর অসুস্থ শিশুকে দেখছিলেন মেহবুবর রহমান। তিনি হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান (এইচওডি)। সে সময় অপেক্ষমাণ রোগীদের কাটিয়ে নিয়ম না মেনেই সেখানে ঢুকে পড়েন কাঞ্চন এবং তাঁর স্ত্রী। তাঁরা দাবি করেন, তখনই তাঁদের আত্মীয়ার রক্তচাপ মাপতে হবে মেহবুবরকে। সেই সঙ্গে প্রেসক্রিপশনে মেটফরমিন লিখে দিতে হবে। স্মারকলিপিতে চিকিৎসকদের সংগঠন লিখেছে, মেহবুবর যখন জানান যে তিনি ওই শিশুর চিকিৎসা করছেন, তখনই দুর্ব্যবহার শুরু করেন বিধায়ক এবং তাঁর স্ত্রী। তাঁরা চিকিৎসকের নাম এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর জানতে চান। সেই সঙ্গে হুমকিও দেন। এই ঘটনা একেবারেই ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে চিকিৎসকেরা স্মারকলিপিতে জানিয়েছেন। বিধায়কের এই আচরণের কারণে অপেক্ষমাণ রোগীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। রোগীর চিকিৎসাতেও বিভ্রাট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে আরডিএ।
স্মারকলিপিতে নিজেদের দাবি তুলে ধরেছে আরডিএ। জানিয়েছে, আসল ঘটনা অনুসন্ধানের জন্য স্বাধীন কমিটি গড়া হোক। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হোক, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান সংগ্রহ করা হোক। তার পরে পশ্চিমবঙ্গ মেডিকেয়ার পরিষেবা ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান (হিংসা এবং সম্পত্তি নষ্ট প্রতিরোধ) আইন, ২০০৯ অনুসারে যথাযোগ্য পদক্ষেপ করা হোক। বড়বাজার থানায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সরকারি ভাবে অভিযোগ করা হোক। আক্রান্ত চিকিৎসককেও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা দেওয়া হোক।
নিজেদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ অবশ্য আগেই উড়িয়ে দিয়েছেন কাঞন এবং শ্রীময়ী। শ্রীময়ী আনন্দবাজার ডট কমকে জানান, ১০ দিন কলকাতার ট্রপিকাল মেডিসিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তাঁর দিদা প্রভারানি মণ্ডল, চর্মরোগজনিত সমস্যার কারণে। তার পর সময়মতো ছাড়াও পেয়ে যান। বুধবার ফের চেকআপ করানোর জন্য দিদাকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন শ্রীময়ী এবং তাঁর স্বামী কাঞ্চন। তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “দিদিশাশুড়ির রক্তচাপ মাপার কথা বলেছিলাম আমি। তাতেই খুব রূঢ় ভাবে জবাব দেন চিকিৎসক। আমায় বলেন, আপনি আমায় নির্দেশ দিচ্ছেন তাতে আমি সরি বলি। এই হাসপাতালের চিকিৎসকেরাই শ্রীময়ীর দিদাকে সারিয়ে তুলেছিলেন। সেখানে ওই চিকিৎসকের কাছ থেকে এমন রূঢ় ব্যবহার পাব ভাবিনি।” তাঁদের দাবি, বাকি পাঁচ জনের মতো টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে ডাক্তার দেখানোর পরে এমন ঘটনা সত্যিই মেনে নেওয়া যায় না।