কসবার আইন কলেজের পড়ুয়াকে ধর্ষণ মামলার তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়ল কলকাতা হাই কোর্টে। পাশাপাশি, এই ঘটনার কেস ডায়েরিও আদালতে জমা দিল পুলিশ। মুখবন্ধ খামে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয় হাই কোর্টে। কী আছে তদন্ত রিপোর্টে তা এখনই জানা যাবে না। বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, আপাতত তদন্ত রিপোর্ট নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবীকেই শুধু দেওয়া হবে। আদালতের নির্দেশ, অন্য কাউকে এই রিপোর্ট হস্তান্তর করা যাবে না। বৃহস্পতিবার নির্যাতিতার পরিবার আদালতে ফের জানায়, পুলিশ বা সিটের তদন্তে তারা সন্তুষ্ট।
কসবার আইন কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টে। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি ছিল। গত শুনানিতে বিচারপতি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে তদন্ত রিপোর্ট এবং কেস ডায়েরি জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেইমতো বৃহস্পতিবারের শুনানিতে রিপোর্ট জমা করল রাজ্য।
কলেজে ধর্ষণকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিল কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ শহরতলি) প্রদীপকুমার ঘোষালের নেতৃত্বে কসবাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে সিট। তদন্তের গতিপ্রকৃতি সংক্রান্ত রিপোর্ট চেয়েছিল হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার আদালত জানায়, চার সপ্তাহ পর আবার তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। আগামী ২১ অগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে আইনের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল গোটা রাজ্যে। ঘটনাটি ঘটে গত ২৫ জুন। তবে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে গত ২৭ জুন। নির্যাতিতার অভিযোগ, বুধবার রাতে প্রথমে কলেজের ইউনিয়ন রুমে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। পরে তাঁকে ধর্ষণ করা হয় রক্ষীর ঘরে নিয়ে গিয়ে। রক্ষীকে সেই সময়ে বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে এক জন, যাঁকে ‘এম’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, তিনি কলেজের প্রাক্তনী। বাকি দু’জন (‘জে’ এবং ‘পি’ হিসাবে চিহ্নিত) এখনও কলেজে পড়াশোনা করছিলেন। ঘটনার দিন দায়িত্বে থাকা কলেজের রক্ষীকেও পরে গ্রেফতার করা হয়। সিটের পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও ধর্ষণকাণ্ডের তদন্ত করছে।
পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হয়েছিল ধৃতদের। পুলিশ আদালতে অভিযোগ করে, অভিযুক্তেরা তদন্তে সহযোগিতা করছে না। তবে নতুন করে কারও পুলিশি হেফাজতে চেয়ে আবেদন করা হয়নি। আদালত ধৃতদের ২২ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে।