জোকা থেকে তারাতলা পর্যন্ত মেট্রো ছুটলেও, বাকি পথের কাজ নানা জটে থমকে ছিল। কখনও জমির সমস্যা, কখনও আবার গাছ কাটা নিয়ে আপত্তি। বিষয়টি শীর্ষ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অবশেষে সব জট কাটিয়ে জোকা-বিবাদি বাগ মেট্রো পথে কাজ শুরু হল। খিদিরপুর এবং ভিক্টোরিয়ার মধ্যে সুড়ঙ্গ খননের কাজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করল কলকাতা মেট্রো।
জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোয় মোমিনপুর থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথে সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ বাকি। এই মেট্রোর দ্বিতীয় পর্বের কাজই হল, ময়দান এলাকায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পাশ দিয়ে পার্ক স্ট্রিট ছুঁয়ে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত সুড়ঙ্গ নির্মাণ। বৃহস্পতিবার থেকে এই পর্বের প্রথম পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে।
খিদিরপুরের সেন্ট টমাস স্কুলের জমিতে টানেল বোরিং মেশিনের ‘লঞ্চিং শ্যাফ্ট’ তৈরি করা হয়েছে। সেই জায়গা থেকেই বোরিং মেশিন ‘দুর্গা’ সুড়ঙ্গ খননের কাজ শুরু করল। প্রথম পর্যায়ে ১.৭ কিলোমিটার সুড়ঙ্গ কাটবে এই বোরিং মেশিন। চেন্নাই থেকে আনা হয়েছে মেশিনটি। দুর্গা ছাড়াও দিব্যা নামে আরও একটি বোরিং মেশিন রয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ওই মেশিন দিয়ে খনন কাজ হবে। বৃহস্পতিবার সুড়ঙ্গ খননের কাজ শুরুর সময় উপস্থিত ছিলেন কলকাতা মেট্রোয় জেনারেল ম্যানেজার পি উদয়কুমার রেড্ডি-সহ একাধিক উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। উদয়কুমার জানান, ‘‘আজ কলকাতার মানুষের কাছে এক ঐতিহাসিক দিন।’’ আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরের মধ্যেই ভিক্টোরিয়া পর্যন্ত সুড়ঙ্গ কাটার কাজ শেষ হয়ে যাবে।
জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর পাঁচ কিলোমিটার সুড়ঙ্গপথে চারটি স্টেশন তৈরি হওয়ার কথা। যে চারটি স্টেশন পরিকল্পনায় রয়েছে, সেগুলি হল: খিদিরপুর, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, পার্ক স্ট্রিট এবং এসপ্ল্যানেড। ২০১০ সাল নাগাদ কাজ শুরুর পর থেকে দীর্ঘ দিন ধরে নানা বাধায় বহু বার থমকেছে জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্প। রাজ্যের মেট্রো প্রকল্পগুলির অগ্রগতির উপরে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নজরদারি শুরু হয়। ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর ওই প্রকল্পের জোকা থেকে তারাতলা অংশে মেট্রো চলাচলের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে তার পর আরও আড়াই বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু বাকি অংশের কাজ তেমন এগোয়নি।