প্রায় প্রতিটি শহরে তো বটেই, হুগলির গ্রামাঞ্চলেও নিকাশি নালাগুলির হাল কার্যত একই। সর্বত্র নালা ভরেছে পাতলা প্লাস্টিকে বা নানা ধরনের বোতলে। কোথাও কোথাও বেআইনি নির্মাণের অভিযোগও রয়েছে। বৃষ্টির জমা জল নামবে কোথায়?
ফলে, লাগাতার বৃষ্টিতে বুধবার জেলার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বহু রাস্তা চলে গিয়েছে জলের তলায়। পরিস্থিতির জন্য এক শ্রেণির নাগরিকদের অসচেতনতাকে দুষছেন বিভিন্ন পুরসভার কর্তারা। শ্রীরামপুরের নানা জায়গায় রাস্তাঘাটে জল জমে যাওয়ায় পুর কর্তৃপক্ষ জানান, এত বৃষ্টি! তার উপর বহু মানুষ বোতল থেকে ক্যারিব্যাগ-সহ প্লাস্টিকের নানা জিনিস, থার্মোকল— সব কিছুই নর্দমায় ফেলেন। পুরপ্রধান গিরিধারী সাহা বলেন, ‘‘ম্যানহোল থেকে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিকের বোতল-সহ অন্যান্য জিনিস ওঠে। মানুষের বোঝা উচিত, এতে নিকাশির মারাত্মক সমস্যা হয়। সবাই বর্জ্য যথাস্থানে ফেললে সমস্যা হয় না।’’
উত্তরপাড়া শহরের বেশ কিছু ওয়ার্ডে নিকাশি নালার উপরে স্ল্যাব পেতে পুরসভা ফুটপাত বানিয়েছে। তার জেরে নালাগুলি ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে অনেকের। পুর কর্তৃপক্ষ অভিযোগ মানেননি। শহরের ১৫ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের পাশাপাশি শান্তিনগর, মধ্য ভদ্রকালীর পলাশ সরণি বর্তমানে জমা জলের কবলে। বন্ধ হিন্দমোটর কারখানার ১০ ফুটের চওড়া নালাও বুজে গিয়েছে। তার জেরে হিন্দমোটর লাগোয়া উত্তরপাড়ার চারটি ওয়ার্ড এবং কোন্নগর স্টেশন লাগোয়া ওয়ার্ডগুলিতে জল থই থই অবস্থা। কাঁঠালবাগান বাজার লাগোয়া গলাপোল অপরিসর এবং বৃষ্টির জল জমায় মাখলার চারটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা ও জেরবার। এখানে না আছে লেভেল ক্রসিংয়ে উড়ালপুল, না আন্ডারপাস।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত অবশ্য বলেন, ‘‘পূর্ব রেল নীতিগত ভাবে চাইছে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী উড়ালপুল বা আন্ডারপাস তৈরি করে ট্রেনের যাত্রাপথ মসৃণ করতে। এ বিষয়ে যথাযথ আবেদন করলে রেল কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়গুলি বিবেচনা করবেন।’’
উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘প্রশাসনিক বৈঠকের পর হিন্দমোটরে সরাসরি গিয়ে সমীক্ষার কাজও হয়েছে। কারখানার মধ্যের নিকাশি নালা সংস্কার হলে জল জমার সুরাহা নিশ্চিত ভাবেই কিছুটা হবে।’’
নিকাশি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছেন পান্ডুয়ার বাসিন্দারা। এ দিন স্কুল খোলা থাকলেও ছাত্রছাত্রী কম এসেছে। রাস্তায় টোটো- অটোও কম ছিল। গন্তব্যে পৌঁছতে বাড়তি ভাড়া দিতে হয়েছে বলে অনেকের অভিযোগ। এ কথা মানেননি ব্লকের টোটো-অটো সংগঠনের সভাপতি সঞ্জয় ঘোষ।