• ‘মিশ্র সাড়া’ ধর্মঘটে, দিনভর টানাপড়েন দুই শহরে
    আনন্দবাজার | ১০ জুলাই ২০২৫
  • কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন এবং ফেডারেশনগুলির ডাকা ১২ ঘন্টার ধর্মঘটে মিশ্র সাড়া মিলল দুই শহরে। বুধবার সকাল থেকে ধর্মঘট সমর্থকারীদের সঙ্গে শাসক দলের বিবাদে উত্তেজনা ছড়াল কয়েক জায়গায়। নকশালবাড়ির সাতভাইয়া মোড়ে এশিয়ান হাইওয়ে অবরোধ করে সিপিএম নেতা, কর্মীরা একটি বেসরকারি বাস আটকে দেয়।

    সেই সময় শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি অরুণ ঘোষের নেতৃত্বে অবরোধ তোলার চেষ্টা হতেই দুই পক্ষের বচসা হয়। তা হাতাহাতি পর্যায়ে পৌঁছালে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়। অবরোধ ওঠে। এ ছাড়াও নকশালবাড়ি পানিঘাটা মোড়েও দুই পক্ষ হাতাহাতি হয়। সেখানে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। সিপিএমের এক কর্মীকে আটক করে পুলিশ।

    তৃণমূলের সভাধিপতির বক্তব্য, ‘‘অনেকের পরীক্ষা ছিল। ধর্মঘটে মানুষের দৈনন্দিন রুটি রুজিতে টান পড়ে। তাই রাস্তা খোলা হয়েছে।’’ আর সিপিএম নেতা গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূল গুন্ডাদের মত আচরণ করেছে। আমরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছি।’’

    গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি শিলিগুড়ির শহরের হিলকার্ট রোডে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ের সামনে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল করছিলেন। সে সময় রাস্তায় যাতায়াতকারী গাড়ি আটকে ঘুরিয়ে দিলে পুলিশ পৌঁছয়। এক পুলিশ কর্মীর টুপি মাথা থেকে খুলে নেন এক ধর্মঘট সমর্থনকারী। এর পরেই পুলিশ ও সিপিএম নেতা কর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। কাউকে অবশ্য আটক করা হয়নি। কয়েক দফায় তৃণমূলের আইএনটিটিইউসি-র মিছিল এবং বামেদের মিছিল মুখোমুখি এসে পড়ে। একে অপরকে লক্ষ্য করে নানা মন্তব্য থেকে তেড়ে যাওয়ার চেষ্টাও দেখা যায়। জলপাইগুড়িতে এ দিন শান্তিপাড়া সরকারি বাস স্ট্যান্ডে ধর্মঘট সমর্থনকারীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বাঁধে। জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের সামনে বিক্ষোভ ও পিকেটিং হলে পুলিশের হস্তক্ষেপে আদালতে প্রবেশ করেন বিচারক-কর্মী-আইনজীবীরা।শহরের একাধিক জায়গা থেকে মোট ৬৭ জন ধর্মঘট সমর্থনকারীদের গ্রেফতার করে পুলিশ৷ জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের বাম প্রার্থী দেবরাজ বর্মণও গ্রেফতার হয়। পরে ব্যক্তিগত জামিনে ছাড়া হয়। শহর লাগোয়া করলাভ্যালি ও ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে ধর্মঘট সমর্থনকারীরা পিকেটিং করেন। তাদের সঙ্গে তৃণমূলের বচসা হয়।

    তরাইয়ের চা বাগানগুলিতে এ দিন কাজকর্ম স্বাভাবিক হয়েছে। ধর্মঘটে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়িতে সরকারি, বেসরকারি স্কুল, কলেজ, অফিস আদালত স্বাভাবিক ছিল। ট্রেন, বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল। অটো, টোটো এবং কিছু বেসরকারি বাসও চলেছে। দুই শহরের মূল এলাকার দোকানপাট ও বাজার বন্ধ থাকলেও শহরের ভেতরে সমস্ত দোকানপাট খোলা ছিল।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)