নতুন করে ডেঙ্গির সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। বিশেষ করে মালদহ, জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং কালিম্পং জেলার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। গত বছর মালদহ জেলায় ২৭৬২ জন আক্রান্ত হন ডেঙ্গিতে। এ বছর এখনও রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের বিচারে জেলাগুলির মধ্যে পাঁচ নম্বরে রয়েছে মালদহ। উদ্বেগ রয়েছে কালিম্পং জেলা নিয়েও। গত বছর জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কালিম্পংয়ে ১৭ জন আক্রান্ত ছিলেন। এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ৫৭। এখনই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে হাতের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা। মালদহে এ বছর জুনে বর্ষা শুরু হতেই সংক্রমণ বাড়তে শুরু হয়েছে বলে দাবি। গত এক সপ্তাহে জেলায় সবচেয়ে বেশি ৩৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি জেলায় এরই মধ্যে অন্তত ছ'টি হটস্পট এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। স্কুলগুলিতে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চলছে। জল্পেশের শ্রাবণী মেলা প্রাঙ্গণে কোথাও যেন জমা জলে মশার লার্ভা জন্মাতে না পারে, তা নজর রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
গত বছর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর মহকুমায় তিনটি ব্লকে ডেঙ্গি সংক্রমণ ছড়ানোয় ক্লাস্টার তৈরি হয়েছিল। বালুরঘাট পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে আদিবাসী হস্টেলের একাধিক আবাসিক ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিল। এ বছর এখনও ক্লাস্টার না মিললেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর চাপে।
কিছুটা স্বস্তি দার্জিলিং জেলায়।। এখনও শিলিগুড়ি পুরসভা এলাকা এবং গ্রামাঞ্চলেও সংক্রমণ অনেকটাই কম। সচেতনতা এবং সতর্কতা না থাকলে যে কোনও সময় পরিস্থিতি ঘুরে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন। কেন না শিলিগুড়ি ডেঙ্গিপ্রবণ। তিন বছর আগেও ডেঙ্গিতে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছিল। গত দুই বছর ধরে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
কোচবিহার জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, প্রতিদিন বৃষ্টির জেরে জল জমছে। আর তাতে ধীরে হলেও বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গি। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘শহরাঞ্চলে আমরা প্ৰতিদিন নজরদারি করছি।’’ আলিপুরদুয়ারে গত বছর এ সময় ডেঙ্গি আক্রান্ত ছিলেন ১৪১ জন। এ বছর ৮ জুলাই পর্যন্ত ৪৫ জন। গত বছর এই সময়ের পর থেকে জেলায় ডেঙ্গির প্রকোপ অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল। তাই কড়া নজরদারি তখন শুরু হয়। উত্তরের আর এক জেলা, উত্তর দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকান্ত বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘ডেঙ্গি রুখতে জমা জল ও আবর্জনা সাফাইয়ের কাজের উপরে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।’’