• মহিলা পরিচয় দিয়ে সেনাকর্তাদের ফাঁসাতেন প্রেমের জালে, পাক-চক্রে যুক্ত দুই যুবক গ্রেফতার পূর্ব বর্ধমানে
    আনন্দবাজার | ০৮ জুলাই ২০২৫
  • মহিলাদের পরিচয় ব্যবহার করে প্রেমের জালে ফাঁসাতেন সেনাকর্তাদের। তার পর তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন স্পর্শকাতর তথ্য নিয়ে পাক সংস্থার কাছে পাচার করতেন। এমনই অভিযোগে দুই যুবক পাকড়াও হলেন পূর্ব বর্ধমানে। রাজ্য এসটিএফের হাতে ধৃত দু’জনের নাম মুকেশ রজক এবং রাকেশ গুপ্ত। অভিযোগ, দু’জনেই পাকিস্তানি চর! ধৃতদের সম্পর্কে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।

    পুলিশ সূত্রে খবর, মুকেশ এবং রাকেশ সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের মেমারি-সহ জেলার বেশ কয়েকটি দোকান থেকে বেনামে সিম কার্ড তুলেছেন। সেই মোবাইল নম্বরগুলি ব্যবহার করা হয়েছে নতুন নতুন হোয়াট্‌সঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খোলার কাজে। পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে ওই নম্বরগুলির মাধ্যমে যোগাযোগ হত তাঁদের। এমনকি, হোয়াট্‌সঅ্যাপের জন্য ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) শেয়ার করা হত পাকিস্তানি এজ়েন্টদের।

    গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বেনামে তোলা ওই মোবাইল নম্বরগুলি মূলত ‘হানি ট্র্যাপ’-এর কাজে ব্যবহার করা হত। ভারতীয় সেনাবাহিনীর আধিকারিকেরাই ছিলেন টার্গেট। মহিলা সেজে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করতেন অভিযুক্তেরা। জানা যাচ্ছে, এই ‘হানি ট্র্যাপ’-এর শিকার বেশ কয়েক জন ব্যক্তি। তাঁদের কাছ থেকে ধাপে ধাপে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাচার করেছেন ওই দু’জন।

    গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, শনিবার গভীর রাতে বর্ধমানের দু’টি পৃথক জায়গায় অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। মঙ্গলবার এই খবর প্রকাশ্যে আনা হয়। জানা যাচ্ছে, মুকেশকে পূর্ব বর্ধমানের একটি নার্সিংহোম থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাকেশকে ধরা হয় মেমারির একটি ভাড়াবাড়ি থেকে। উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সঙ্গে রাজ্যের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স একাধিক বার তদন্তে নেমে প্রমাণ পেয়েছে যে, সমাজমাধ্যম ব্যবহার করে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ভারতীয় সেনা ও টেলিকম সংস্থার কর্মীদের নিশানা করছে। ‘হানি ট্র্যাপ’-এর শিকারদের কাছ থেকে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মূলত পাকিস্তানি মহিলা এজ়েন্ট অথবা, ভুয়ো আইডি ব্যবহার করে পুরুষেরা ‘প্রেমিকা’ সেজে সমাজমাধ্যমে যোগাযোগ করেন নিশানাদের। কিছু দিন গল্পগুজবের পর হোয়াট্‌সঅ্যাপ নম্বর চালাচালি হয়। তার পর ভিডিয়ো কল, ছবি পাঠানোর মাধ্যমে বিশ্বাস অর্জন করেন অভিযুক্তেরা। ব্যক্তিগত কথাবার্তার মাধ্যমে তথ্য আদায় করে থাকেন তাঁরা। অনেক সময় মোটা অঙ্কের অর্থের লোভ দেখিয়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য নেওয়ারও চেষ্টা হয়।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)