• হাতুড়ে ডাক্তারের পর-পর পাঁচ ইঞ্জেকশনেই সব শেষ! অভিযোগ দায়ের স্বাস্থ্য দপ্তরে...
    আজকাল | ০৯ জুলাই ২০২৫
  • মিল্টন সেন: হাসপাতালে যেতে ভয় পেতেন। শরীর খারাপ হওয়ায় বাড়ির কাছেই ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন। জানতেন না সেই ডাক্তারের কোনও ডিগ্রি নেই। কাল হল সেটাই। মৃত্যু হয়েছে চুঁচুড়া কোদালিয়ার বাসিন্দা কৃষ্ণ কর্মকারের (৫৫)। পরিবারের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে কৃষ্ণ কর্মকারের। 

    শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে সোমবার হুগলি স্টেশন রোডে এস কে বৈদ্য নামে এক হাতুরে চিকিৎসকের চেম্বারে গিয়েছিলেন কৃষ্ণ কর্মকার। প্রৌঢ়ের স্ত্রী জানান, হালকা জ্বর হয়েছিল কৃষ্ণ বাবুর। সঙ্গে পায়ে টান ধরছিল,শ্বাসকষ্টও হচ্ছিল। তাই চিকিৎসকের কাছে স্বামীকে নিয়ে গিয়েছিলেন। শ্বাসকষ্টের জন্য ইনহেলার দেওয়ার কথা বললে ডাক্তার পরপর পাঁচটা ইঞ্জেকশন দেন। পাঁচ মিনিটের মধ্যে সব শেষ হয়ে যায়।

    মৃতের স্ত্রীর দাবি, চিকিৎসকই নিজেই অটো ডেকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর পর তড়িঘড়ি ওই চিকিৎসক চেম্বার বন্ধ করে সেখান থেকে চলে যান। এরপর থেকে ফোনেও আর তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসকের এমবিবিএস ডিগ্রী বা কোনও রেজিস্ট্রেশন নেই। সেটা কৃষ্ণ বাবুর পরিবার জানতেন না। পাড়ার একজন তাঁদের বলেছিল, তাই ওই ব্যক্তির কাছে স্বামীকে নিয়ে গিয়েছিলেন মৃতের স্ত্রী। 

    "সব শেষ হয়ে গেল" বলেছেন মৃতের স্ত্রী রাধারানী কর্মকার। প্রৌঢ়ের ছেলে রৌনক কর্মকার জানান, তিনি স্বাস্থ্য দপ্তরে অভিযোগ জানাবেন। তাঁর বাবার সঙ্গে যেটা হয়েছে আর কারোর সঙ্গে যেন আর কখনও না হয়, তাই। 

    হুগলি স্টেশন রোডে যেখানে চেম্বার করেন ওই তথাকথিত চিকিৎসক তাঁর প্রতিবেশী এক ব্যবসায়ী বলেন, "দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এলাকায় ডাক্তারি করছেন উনি। গতকাল ওই রোগী যখন এসেছিল তখন নিজে হাঁটাচলা করছিলেন। তারপর কি হল তড়িঘড়ি চেম্বার বন্ধ করে দিয়ে চলে গেলেন ডাক্তার। আগে এলাকার এক ওষুধের দোকানে চেম্বার করতেন। এখন নিজেই আলাদা একটি চেম্বার খুলেছেন।" 

    ছাপানো প্যাডে না সাদা কাগজে স্ট্যাম্প মেরে প্রেসক্রিপশন লেখেন ডাক্তার। সেখানে কোথায় কোথায় কোন কোন সময় রোগী দেখেন তার বিবরণ দেওয়া। প্রেসক্রিপশন এর মাথায় লেখা জেনারেল ফিজিশিয়ান। মৃতের পরিবার অভিযোগ পাঁচটা ইঞ্জেকশন দেওয়াতেই মৃত্যু হয়েছে। এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার জন্য ফোন করলে ওই ডাক্তারের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
  • Link to this news (আজকাল)