প্রতি মাসে ৩৭০ জন স্থায়ী এবং ৩ হাজার ৬৫৮ জন অস্থায়ী কর্মীর বেতন থেকে কর্মচারী প্রভিডেন্ট ফান্ড (ইপিএফ)-এর টাকা কাটা হচ্ছে। কিন্তু তা অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে না। এমনই অভিযোগ ঘিরে শোরগোল পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল পুরনিগমে। কর্মীদের দাবি, এ নিয়ে পুরনিগমের মেয়র, ডেপুটি মেয়র, কমিশনার থেকে সচিবের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। কিন্তু কোনও সমাধান মেলেনি। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শোরগোল। বিজেপি বলছে, এটা কর্মীদের সঙ্গে প্রবঞ্চনা। পুরনিগমের জবাব, খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।
আসানসোল পুরনিগমের স্থায়ী কর্মীদের সকলে এবং অস্থায়ী কর্মীদের একাংশ কর্মচারী প্রভিডেন্ড ফান্ডে টাকা জমানোর সুবিধা পান। তাঁদের দাবি, বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে টাকা জমা পড়েনি। অথচ, বেতন থেকে ইপিএফের জন্য টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু জবাব মেলেনি। স্বাভাবিক ভাবে এ নিয়ে তোলপাড় পুরনিগম। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তথা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের বক্তব্য, ‘‘বিগত কয়েক বছর ধরে কর্মীদের ইপিএফের টাকা জমা হয়নি। এ জন্য পিএফ কর্তৃপক্ষ সুদ ও জরিমানা দাবি করতে পারেন। যা শেষ পর্যন্ত নাগরিকদের করের টাকা থেকে জমা হবে।’’ বিধায়কের দাবি, ‘‘এটা অপরাধ। তাৎক্ষণিক টাকা জমা না হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হোক।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘কিছু কর্মী আমাকে অভিযোগ করেছেন যে, তাঁদের নাকি পিএফ অ্যাকাউন্টই নেই। অথচ পিএফের নামে টাকা কাটা হচ্ছে। যদি তা সত্যি হয়, তা হলে অবিলম্বে তাঁদের অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হোক।’’ এ নিয়ে সুর চড়িয়েছে সিপিএমও। ওই দলের রাজ্য কমিটির নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায় এই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য আরটিআই করেছেন। তিনি জানান, আগামী ৯ জুলাই ধর্মঘটে এই দাবিও উত্থাপিত হবে। কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে তো দুর্গাপুরে প্রায়শই বলতে শোনা যায়, কারখানার মালিকরা যদি কর্মীদের পিএফ না দেন, তা হলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন তাঁদেরই দল পরিচালিত পুরনিগমের কর্মীদের পিএফের টাকা জমা হচ্ছে না! এ বার তিনি কী বলবেন?’’
এই পরিস্থিতিতে পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র ওয়াসিমুল হকের ব্যাখ্যা, ‘‘এজেন্সিগুলির ভুল হতে পারে। কিন্তু স্পষ্ট অভিযোগ পাইনি। খবর নিয়ে দেখব।’’ পুরনিগমের কমিশনার রাজু মিশ্রের মন্তব্য, ‘‘এটা অন্তর্বর্তী বিষয়। সকলের টাকা জমা হয়ে যাবে।’’ কিন্তু কর্মীরা উদ্বিগ্ন। এর সমাধান কী ভাবে হবে, তাই নিয়ে সকলে চিন্তিত।