বার বার হেনস্থার অভিযোগ সুকান্তের, রাজ্যকে ‘নজর’ দিতে বলল কলকাতা হাই কোর্ট
আনন্দবাজার | ০৮ জুলাই ২০২৫
পুলিশের হাতে বার বার হেনস্থার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। কেন বার বার এই ধরনের ঘটনা ঘটছে? সে দিকে নজর দেওয়ার জন্য রাজ্যকে পরামর্শ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। আগামী ২৪ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি। এই মামলার সব পক্ষকে তাদের বক্তব্য হলফনামা আকারে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ নিয়ে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলা করেছিলেন সুকান্ত। মঙ্গলবার সেই মামলা নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় বিচারপতির। শুনানিতে সুকান্তের আবেদন ছিল, এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা রাজনীতিবিদদের কর্মসূচিতে গিয়ে বার বার বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। রাজনীতিবিদদের কর্মসূচি নিয়ে এসওপি তৈরি করা হোক। পাশাপাশি, সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কোথায় কোথায় কী ভাবে হেনস্থার শিকার হয়েছেন, তা-ও আদালতের সামনে তুলে ধরেন সুকান্ত।
মামলাকারীর বক্তব্যের পর বিচারপতি ঘোষ রাজ্যকে কিছু পরামর্শ দেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যে ধরনের ঘটনা ঘটছে, সে দিকে নজর দিন। কাউকে আটকে রাখা হচ্ছে, পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছে, বাধা দিচ্ছে, এমন ঘটনা সামনে আসছে। যদি কোনও সাধারণ মানুষের সঙ্গে এই ধরনের ঘটনা ঘটত, তবে কোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হত। কোর্ট করবে। কিন্তু এক জন রাজনীতিবিদ যদি বার বার এমন অভিযোগ নিয়ে কোর্টে আসতে হয়, তবে সেটা খুবই বিড়ম্বনার। সে দিকে নজর দিন।’’
তবে রাজ্যের বক্তব্য ছিল, মামলাকারী আদালতের অনুমতি নিয়ে কর্মসূচিতে যাননি। পুলিশের তরফে অনুমতি ছিল না। সেই কারণেই তাঁকে আটকানো হয়েছে। রাজ্যের বক্তব্যের জবাবে সুকান্তের তরফে দাবি করা হয়, এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বা জ়েড ক্যাটেগরি নিরাপত্তাপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসাবে তিনি কোথায় যাচ্ছেন তাঁর বিবরণ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের কাছে জমা দিতে বাধ্য। এই পদ্ধতি নিয়ে রাজ্য অবগত। মঙ্গলবার দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন জানিয়েছেন বিচারপতি ঘোষ।
সম্প্রতি সুকান্তকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। কখনও বজবজে, আবার কখনও খাস কলকাতাতেই পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। গ্রেফতারও হয়েছেন তিনি। পরে ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন পান তিনি। বিজেপির অভিযোগ, বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বার বার পুলিশের হাতে হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। মামলা দায়েরের সময় সুকান্তের আইনজীবীর বক্তব্য ছিল, তাঁর মক্কেলকে বার বার পুলিশি হেনস্থার সম্মুখীন হতে হয়েছেন। পুলিশের অতিসক্রিয়তার বিরুদ্ধে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাকে চিঠিও লেখা হয়েছিল। কিন্তু কোনও জবাব আসেনি।