রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পেয়েই ‘দাবাং’ দিলীপকে সল্টলেকে আমন্ত্রণ, মান ভাঙাতে পারবেন শমীক?
প্রতিদিন | ০৮ জুলাই ২০২৫
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পেয়েই শমীক ভট্টাচার্য বুঝিয়ে দিয়েছেন, বিজেপিতে আদিদের গুরুত্ব বাড়বে। স্বাভাবিকভাবেই ‘ব্রাত্য’ দিলীপকে নিয়ে তাঁর অবস্থান কী হবে, তা নিয়ে চর্চা সবমহলে। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার সল্টলেকে দিলীপকে (Dilip Ghosh) আমন্ত্রণ জানালেন শমীক। শোনা যাচ্ছে, তাতে সাড়া দিয়ে এদিন একবছর পর সল্টলেকে বিজেপির রাজ্যদপ্তরে যাবেন দিলীপ। এই বৈঠকে কি গলবে বরফ? ফের বিজেপির মূলস্রোতে ফিরবেন দিলীপ? উত্তরের অপেক্ষায় সবমহল।
শুভেন্দু অধিকারী-সুকান্ত মজুমদারের জমানায় বঙ্গ বিজেপির এককালের সব থেকে দাপুটে নেতা দিলীপ ঘোষ যে অনেকটাই ব্যাকফুটে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এদিকে বাংলায় বিজেপির উত্থানের নেপথ্যে কিন্তু ছিলেন এই ‘দাবাং’ নেতাই। তাই দল ‘ব্রাত্য’ করায় অভিমান হয়েছে নেতার। কিন্তু ভেঙে পড়ার লোক তিনি নন। তাই খোদ আরএসএস নেতৃত্বকে সাফ জানিয়েছিলেন, নিজের মতো করেই কাজ করবেন। অনুমতিও মিলেছিল। কিন্তু তারপরও বঙ্গ বিজেপির কোনও সভা, সমিতিতে ডাক পাননি দিলীপ। মোদি-শাহ শহরে এসেছেন, সভা করেছেন, কিন্তু সেখানেও ‘ব্রাত্য’ই ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ-বিধায়ক। স্বাভাবিকভাবেই অভিমান একটা সময়ে পাহাড়ের আকার নিয়েছে। প্রকাশ্যে পালটা আক্রমণের পথে হেঁটেছেন দিলীপ। বুঝিয়ে দিয়েছেন, “কুছ পরোয়া নেহি, দিলীপ একাই একশো।”
আর সেখান থেকেই শুরু হয়েছে তাঁর বিজেপি ত্যাগের জল্পনা। কখনও কানাঘুষো হয়েছে, বিজেপি ছেড়ে নতুন দল গড়ছেন দিলীপ (Dilip Ghosh)। আবার দিঘার জগন্নাথধাম দর্শনের পর থেকে কারও কারও দাবি পদ্ম ছেড়ে এবার ঘাসফুলের পথে তিনি। বহুবার সরাসরি এহেন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন বিজেপি নেতা। কিন্তু কোনওবারই কিছু খোলসা করেননি। বরং বারবার উসকে দিয়েছেন জল্পনা। এসবের মাঝেই শোনা যাচ্ছে, একুশে জুলাই তৃণমূলের মঞ্চে নাকি বিরাট চমক রয়েছে। তাতেই অনেকের ধারণা, হয়তো সেখানেই তৃণমূল পরিবারের সদস্য হবেন বিজেপির ‘দাবাং’ নেতা। দিলীপ জানান, ২১ জুলাই কোনও না কোনও মঞ্চে থাকবেন তিনি। কিন্তু কোন মঞ্চ? কাদের মঞ্চ? তা ধোঁয়াশাই। ফলে একদিকে যেমন দিলীপের নতুন দল গঠন বা তৃণমূলে যোগের সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে। ঠিক তেমনই মাথাচাড়া দিয়েছে আরও এক জল্পনা। তা হল, বিজেপিতেই বাড়তে পারে দিলীপের গুরুত্ব। শমীক ভট্টাচার্য রাজ্য বিজেপির সভাপতি হওয়ার পর থেকেই আদি নেতাদের গুরুত্ব বেড়েছে। একুশে জুলাইয়েই নব্যদের ‘চক্রান্ত’কে পিছনে ফেলে শমীকের হাত ফের দিলীপের বিজেপির মূলস্রোতে ফিরতে পারেন বলেও মনে করছে ওয়াকিবহল। এসবের মাঝে এদিনের বৈঠকে যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।