সত্যজিৎ রায় শেষ দিন পর্যন্ত নিজে ফোন ধরতেন, এখন কাজ ফুরোলে কেউ কথা বলেন না, সকলেই মুরুব্বি
আনন্দবাজার | ০৮ জুলাই ২০২৫
বছরের আর পাঁচটা দিন আর জন্মদিনে খুব ফারাক নেই আমার। যখন পুরোদমে অভিনয় করছি তখন এ দিন তবু ফোন-টোন আসত। সে সব অনেক কাল বন্ধ। এখন এমনি দিনেই আমার ফোন কেউ ধরেন না! কাজের জন্য কিংবা কুশল জানতেও ফোন করি যখন, ফোন বেজে যায়। কাকে ছেড়ে কার নাম বলব? বছর দু’য়েক আগে এক নামজাদা পরিচালকের সিরিজ়ে অভিনয় করলাম। কাজ যত ক্ষণ করেছি তত ক্ষণ কত কথা! ইদানীং ফোন করলে ধরেন না তিনি! কাজ ফুরলো তো কথাও ফুরলো।
আগে এমনটা ছিল না। স্বয়ং সত্যজিৎ রায় শেষ দিন পর্যন্ত নিজে ফোন ধরতেন। নিপাট ভদ্রলোক ছিলেন। আমি অবশ্য অভ্যস্থ হয়ে উঠেছি। বুঝেছি, এটাই রীতি। এখ আর গায়ে মাখি মা। কারণ, সবাই মুরুব্বি। শরীর আমার আগের থেকে ভালই। বয়স হয়েছে। টুকটাক অসুস্থতা থাকবেই। অনেক দিন অভিনয়ে নেই। দিন কাটে বই, খবরের কাগজ পড়ে। কখনও হয়তো বন্ধুরা আসেন। আর গিন্নি আছেন। তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করতে করতে কেটে যায়। জন্মদিনে তিনি নিজের হাতে পাঁঠার মাংস, পায়েস রাঁধেন। রান্নার দিদি দুর্দান্ত ডিমের ডেভিল বানান। এ দিন ওটাও পাতে থাকে।
কেন আমায় অভিনয়ে ডাকা হয় না, জানি না। আমার অভিজ্ঞ চোখ অনেক কিছু বুঝে ফেলবে, তাই? জানি না। তবে টলিউডের পরিবর্তন ঘরে বসেই চোখে পড়ে। কত দলাদলি, রাজনীতি। প্রত্যেকে অর্থলোভী। কাজের মান কমতে কমতে কোথায় নেমেছে!
এ দিকে অর্থের লালসায় সরকারি কোষাগার শূন্য। এ সব হওয়ারই ছিল। যত দল তত বিবাদ। তার পরেও বলব, শুধু খারাপ কেউ হন না। প্রত্যেকের মধ্যে কিছু না কিছু ভাল গুণ রয়েছে। শুধু দোষ না ধরে সেই ভাল গুণও বের করে আনা উচিত। তা হলে বোধহয় সমাজে সাম্য ফিরবে।