সালটা ২০১৭-১৮, তখন কলকাতা ময়দানের ভবানীপুর ক্লাবের ক্রিকেট দলের কোচ ছিলেন সিউড়ির বাসিন্দা আব্দুল মোনায়েম। তখনই প্রতিপক্ষ ইউনাইটেড ক্লাবের জার্সিতে প্রথম বার আকাশদীপকে দেখেন তিনি। কমবয়সি লম্বা ছেলেটার একটানা প্রচণ্ড গতিতে বলা করা দেখে খেলা চলাকালীনই ইউনাইটেডের কোচ সৌতম মিত্রের কাছ থেকে আকাশদীপকে ভবানীপুরে নিয়ে আসার জন্য কথাও বলেন মোনায়েম। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। পরের বছরই ময়দানের বড় ক্লাব মোহনবাগান আকাশদীপকে সই করায়।
মোহনবাগান থেকে বাংলার রঞ্জি দলে সুযোগ এবং অবশেষে দেশের জার্সিতে ইংল্যান্ডের এজবাস্টন টেস্ট ম্যাচে দশ উইকেট নিয়ে নায়ক— এই পুরো যাত্রাপথে বহু বার নানা ভাবে আকাশদীপকে কাছ থেকে দেখেছেন মোনায়েম। আকাশের এই সাফল্যের পিছনের প্রবল অধ্যবসা, শেখার আগ্রহ এবং পারবারিক শিক্ষার বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন সিউড়ির ভূমিপুত্র তথা ইস্টবেঙ্গল ক্রিকেট দলের কোচ আব্দুল।
মোনায়েম জানান, ২০১৭-১৮ সাল নাগাদ বিহারের রঞ্জির দল হত না। তখন বিহার থেকে বেশ কয়েকজন ভাল খেলোয়াড় বাংলায় চলে আসেন। মুকেশ কুমার, আকাশদীপেরা সে ভাবেই বাংলায় এসেছিলেন। প্রথমে টেনিস বলে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খেলতেন তিনি৷ সেখান থেকে আকাশদীপকে ইউনাইটেড ক্লাবে নিয়ে আসেন সৌতম।
ইউনাইটেডের মতো ছোট ক্লাব থেকে খেলা শুরু করলেও আকাশদীপের ক্ষুরধার বোলিং চোখে পড়েছিল সকলেরই। ময়দানের গড়পড়তা খেলোয়াড়দের থেকে আকাশদীপ প্রথম থেকেই কিছুটা আলাদা ছিলেন, দাবি বর্তমানে ইস্টবেঙ্গলের ক্রিকেট কোচ মোনায়েমের। যেহেতু আকাশদীপের বাবা শিক্ষক ছিলেন এবং আকাশদীপের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও পারিবারিক শিক্ষা দুইই ছিল, তাই তাঁর ব্যবহার ও শেখার আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো৷
মোনায়েম বলেন, “লম্বা চেহারা নিয়ে ওঁর প্রচণ্ড জোরে বাউন্স রেখে বল করা দেখেই ওকে আমাদের দলে চেয়েছিলাম৷ কিন্তু এ ধরনের বোলার ময়দানে সব বড় দলই তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। আকাশদীপকেও মোহনবাগান সই করিয়েছিল। এর পরে ওর বিপক্ষে খেলা দেখার সুযোগ হয়েছে। সামনে থেকে ওর বদল দেখেছি। তবে ওকে কোচিং করানোর সুযোগ হয়নি।”
তিনি আরও জানান, ময়দানের সকলেই জানতেন যে আকাশদীপ অনেক বড় মঞ্চে পৌঁছবে। কারণ ওঁর মধ্যে সেই যোগ্যতাটা ছিল। তবে এ ভাবে টিভির সামনে বসে দেশকে জেতাতে দেখার একটা আলাদা উচ্ছ্বাস তো আছেই, জানালেন মোনায়েম।