অনুপ্রবেশকীর সন্দেহে অসমের ‘ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল’ আইনে মামলা দায়ের হল কোচবিহারের দিনহাটার এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সীমান্ত লাগোয়া দিনহাটার সাদিয়ালের কুঠির উত্তমকুমার ব্রজবাসী নামে ওই বাসিন্দাকে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) আওতায় আনা হয়েছে। কী ভাবে পশ্চিমবঙ্গের এক বাসিন্দার বিরুদ্ধে অসমে এমন মামলা হতে পারে, সে প্রশ্ন উঠেছে। উত্তমের দাবি, ‘‘অসম তো দূর, অন্য কোনও রাজ্যেই যাইনি কখনও। তবু কেন এমন মামলা হল, বুঝতে পারছি না।’’
উত্তমকে পাঠানো নথিতে জানানো হয়েছে, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে উপযুক্ত নথিপত্র দেখাতে না পারলে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে চিহ্নিতকরা হবে। চলতি জানুয়ারিতে কামরূপ জেলা পুলিশ সুপার কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপারের অফিসেরমাধ্যমে উত্তমকে একটি নোটিস পাঠান। তাতে উল্লেখ করা হয়,উত্তম অনৈতিক ভাবে কোনও এক সময়ে গুয়াহাটি গিয়েছিলেন। সে জন্য অসম ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল এফটি কামরূপ (এম) সেকেন্ড কোর্টে ২০১৫ সালে তাঁর নামে একটি মামলাদায়ের হয়।
নোটিস পেয়ে আইনজীবীর পরামর্শে উত্তম অসমের আদালতে হাজির হয়ে জানান, তিনি ভারতীয় নাগরিক। তাঁর ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড— সবই আছে। উত্তমের কথায়, ‘‘১৯৭০ সালের আগে থেকে আমার বাবার মৃত্যুর তারিখ পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনের ভোটার তালিকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ভোটার তালিকার কপি জমা দিতে না পারলে আমাকে অনুপ্রবেশকারী হিসাবে ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।’’ এর পরে তিনি বিষয়টি কোচবিহারের জেলা প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানান।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহের বক্তব্য, ‘‘অসম পুলিশ কোন সাহসে কোচবিহারের দিনহাটার নাগরিককে এনআরসি সংক্রান্ত চিঠি পাঠায়? এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলন হবে।’’ মাথাভাঙার বিজেপি বিধায়ক সুশীল বর্মণের পাল্টা দাবি, ‘‘ওই ব্যক্তি দিনহাটার ভোটার। এখানকার কোনও ভোটারের নামে নোটিস জারি হলে, তা দেখার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। এর পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। বিজেপিকে বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে।’’
কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’