বিভিন্ন কলেজের সুরক্ষা-অডিট খতিয়ে দেখার উপরে জেল দিয়েছে পুলিশ। কসবার আইন কলেজে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার পরে, জেলায় এই উদ্যোগ তাৎপর্যপূর্ণ। সূত্রের খবর, গত সপ্তাহের প্রথমে বর্ধমান থানা বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করে।সেখানে ওই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কতগুলি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে তার হিসাব নেয় পুলিশ। সিসি ক্যামেরা নিয়ে অডিট করানো ও ক্যামেরা খারাপ থাকলে তা সারিয়ে নিতে বলা হয়। আরও বলা হয়, পরিচয়পত্র ছাড়া কোনও ভাবেই কেউ যাতে কলেজে ঢুকতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনও প্রয়োজনে বহিরাগত বা প্রাক্তনীরা কলেজে ঢুকলে তা ‘লগ বুকে’ লিখে রাখা উচিত। এতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যাবে। ছুটি হওয়ার পরে কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয় কারা ঢুকতে পারবেন, তার তালিকা থাকাও দরকার।
কসবার ঘটনা নিয়ে, কলেজে কলেজে প্রাক্তনীদের উৎপাত নিয়ে অস্বস্তিতে জেলা টিএমসিপিও। কাল, বুধবার টিএমসিপি’র সক্রিয় সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করবেন সংগঠনের জেলা সভাপতি স্বরাজ ঘোষ। তিনি বলেন, “বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে রাজ্য সভাপতির সঙ্গেও ভার্চুয়াল বৈঠক করব।’’ সূত্রের খবর, পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটিগুলিকে সক্রিয় করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ইউজিসি’র বিধি মেনে প্রতিটি কলেজে অ্যান্টি-র্যাগিং কমিটি থাকলেও তা বিশেষ সক্রিয় নয়। অভিযোগ, নিয়মিত বৈঠক হয় না কমিটির। র্যাগিং প্রতিরোধ নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত সচেতনও করা হয় না। অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করে না। পুলিশের পরামর্শ, ওই সব কমিটির নিয়মিত বৈঠক হওয়া ও ছাত্রছাত্রীদের সচেতনতা বাড়ানো দরকার। টিএমসিপি’ও নড়েচড়ে বসেছে। হাই কোর্টের রায়ে ছাত্র সংসদের কক্ষ বন্ধ করে দিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে কলেজের সংগঠন বাড়ানো ও বহিরাগত এবং প্রাক্তনীদের কারণে উদ্ভূত সমস্যা কী ভাবে মেটানো যায়, তা নিয়ে বুধবার আলোচনা করবে টিএমসিপি।
সংগঠন সূত্রে জানা যায়, প্রত্যেকটি কলেজের ইউনিটকে প্রাক্তনী বা বহিরাগতদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে বলা হয়েছে। কোন কোন প্রাক্তনী বা বহিরাগত নিয়মিত কলেজে গিয়ে উৎপাত করেন, তার তালিকা দিতে বলা হয়েছে। বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলির অভিযোগ, শহরের বুকে রাজ কলেজেই তো প্রাক্তনী ও বহিরাগতদের আনাগোনা রয়েছে। সেখানে উৎপাত বন্ধ করতে পারবে তো শাসক দল? আগে তা করে দেখাক। তার পরে না হয় জেলাজুড়ে কলেজে কলেজে প্রাক্তনীদের দৌরাত্ম্য বন্ধে অভিযান চালাবে। এবিভিপি নেতা রাজেন সেন বলেন, “এ সব আসলে মানুষকে বোকা বানানোর কৌশল।”