• ‘বক্তব্য না শুনেই রায় দিয়েছিল সিঙ্গল বেঞ্চ’! প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় সওয়াল পার্শ্বশিক্ষকদের
    আনন্দবাজার | ০৭ জুলাই ২০২৫
  • প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিল করার আগে তাঁদের কোনও বক্তব্যই শোনা হয়নি! কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে সোমবার এমনই অভিযোগ করলেন মামলাকারী শিক্ষকেরা। তাঁরা আরও জানান, সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে যদি উচ্চতর বেঞ্চ হস্তক্ষেপ না-করত তবে তাঁদের রাস্তায় বসতে হত!

    কলকাতা হাই কোর্টে তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে চলছে প্রাথমিকের ৩২ হাজার জনের চাকরি বাতিলের মামলা। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে পার্শ্বশিক্ষকদের পক্ষের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্রের সওয়াল, ‘‘একটি মামলায় অনেক পক্ষ যুক্ত রয়েছে। তবে খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে সিঙ্গল বেঞ্চ সবার বক্তব্য না শুনেই রায় ঘোষণা করে দিল। আর এতে আমার মক্কেলরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।’’ আইনজীবী মিত্র এ-ও বলেন, ‘‘উচ্চতর আদালত নির্দেশ না দিলে আমার মক্কেলদের এখন রাস্তায় বসে থাকতে হত। ধর্না দিতে হত। ভাগ্যিস তা হয়নি।’’

    মামলাকারীদের আইনজীবীর বক্তব্য, ২০১৬ সালের ২ মার্চ একটি বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সেখানে বলা হয়, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার পার্শ্বশিক্ষকদের ১০ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়া হয়। সেই মতো ৪২ হাজার ৯৪৯ শূন্যপদের জন্য ৪২৯৫ পদ রাখা হয় পার্শ্বশিক্ষকদের জন্য। তার মধ্যে ৩২০৫ পদে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। ওই শিক্ষকদের মধ্যে ২৩৯ জন প্রশিক্ষিত ছিলেন। পরে চাকরিরত অবস্থায় বেশির ভাগ পার্শ্বশিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চ এই সব পার্শ্বশিক্ষকদের বক্তব্য না শুনেই রায় দিয়েছে। এই মামলার শুনানি সোমবার শেষ হয়নি। আগামী ১৪ জুলাই আবার এই মামলার শুনানি হবে।

    ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন প্রায় এক লক্ষ ২৫ হাজার প্রার্থী। পর্ষদ ২০১৬ সাল থেকে তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে। চাকরি দেওয়া হয় ৪২ হাজার ৯৪৯ জনকে। কিন্তু ওই নিয়োগে একাধিক ত্রুটির অভিযোগ করে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। তারই ভিত্তিতে ২০২৩ সালের ১৬ মে কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং চাকরিহারা শিক্ষকেরা। এর পরে সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। তার পর সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হয়েছিল। যদিও শীর্ষ আদালত হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেই এই মামলা ফেরত পাঠায়। তার পর থেকেই মামলার শুনানি হচ্ছে বিচারপতি চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)