রেজিস্ট্রেশন বাতিলের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ শান্তনু, কলকাতা হাইকোর্টে চিকিৎসক নেতা
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৪ জুলাই ২০২৫
বড় ধাক্কা খেয়েছেন তৃণমূলের চিকিৎসক-নেতা শান্তনু সেন। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল তাঁর চিকিৎসক রেজিস্ট্রেশন বাতিল করেছে। তবে সেই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ চিকিৎসক নেতা। এবার সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করলেন তিনি। শুক্রবার বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে বিষয়টি উত্থাপন হয়। শান্তনুর সাফ বার্তা, অন্যায় হলে তা মুখ বুজে মেনে নেওয়ার প্রশ্নই নেই।
একসময় কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর থেকে রাজ্যসভার সদস্য, দলীয় রাজনীতিতে তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ সংক্রান্ত বিস্ফোরক মন্তব্যের পর থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে তাঁর। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে সাসপেন্ড করে দল। সেই সঙ্গে হারান মুখপাত্রের পদও। শেষপর্যন্ত দলের বাইরে থাকলেও, চিকিৎসক পরিচয়টিই ছিল তাঁর শেষ ভরসা। এবার তা-ও প্রশ্নের মুখে। কাউন্সিলের অভিযোগ, শান্তনু ‘এফআরসিপি গ্লাসগো’ নামে এক বিদেশি ডিগ্রি ব্যবহার করছিলেন, যা তিনি কখনও রেজিস্ট্রেশনের সময় জানাননি। সেই কারণেই তাঁর নাম দু’বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় মেডিক্যাল কাউন্সিল। যদিও, ওই ডিগ্রিকে ঘিরে এখনও সংশয় রয়েছে। মেডিক্যাল কাউন্সিল জানিয়েছে, গ্লাসগোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মেল করে স্পষ্ট জানতে চাওয়া হয়েছিল, এই ডিগ্রি চিকিৎসা প্র্যাকটিসের অনুমতি দেয় কি না। তবে এখনও পর্যন্ত সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর আসেনি।
শান্তনু সেন অবশ্য গোটা ঘটনাকেই একপ্রকার ‘চক্রান্ত’ বলেই মনে করছেন। তাঁর কথায়, যে রেজিস্ট্রেশন অর্জন করতে তাঁকে পড়াশোনা, পরিশ্রম করতে হয়েছে, তা এভাবে কেড়ে নেওয়া যাবে না। তিনি আশাবাদী, আইনি পথে ন্যায় পাবেন। উল্লেখ্য, আরজি কর সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যে সরব হয়েছিলেন শান্তনু। অভিযোগ তুলেছিলেন নিজের কন্যার উপরও ‘চাপ’ তৈরি হয়েছিল। এর পরেই দলীয়ভাবে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁর সঙ্গে। এমনকি তাঁর স্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর কাকলি সেন সম্প্রতি বাদ পড়েছেন পুরসভার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে।
পরিস্থিতি দেখে রাজনৈতিক মহলের একাংশের জল্পনা, এটা কি শুধুই পেশাগত অনিয়ম, না কি এর নেপথ্যে রয়েছে বড় কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ রয়েছে? শান্তনুর ঘনিষ্ঠরা বলছেন, যা ঘটছে তা নিছক পেশাগত বিষয় নয়, বরং তার পেছনে স্পষ্ট রাজনৈতিক চাপানউতোর রয়েছে।এখন আদালতের রায় কী হয়, তার দিকেই তাকিয়ে চিকিৎসক-নেতা শান্তনু সেন।