এই সময়, আসানসোল: পশ্চিম বর্ধমান জেলায় হিন্দিভাষী ভোটারদের বিপুল সংখ্যাই ভাবাচ্ছে তৃণমূলকে। জেলার ন’টি আসনের সবকটিতে জেতার লক্ষ্য ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে।
সেই লক্ষ্য পূরণে অন্যতম ‘ফ্যাক্টর’ এই হিন্দিভাষীদের ভোট, মানছেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। সেই কারণেই জেলায় দলের পাশাপাশি যুব সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়ে আসা হলো হিন্দিভাষী নেতাদের।
তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব আগেই জেলায় দলের চেয়ারম্যানের পদে মনোনীত করেছেন হিন্দিভাষী নেতা ও জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিংকে। এ বার জেলায় যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতির পদে সিনটু ভুঁইয়ার নাম ঘোষণা করা হয়েছে, যিনি পশ্চিম বর্ধমানে দলের হিন্দি সেলের সভাপতি।
সেই সঙ্গেই টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকায় প্রাতিষ্ঠানিকতা–বিরোধী মনোভাবও যে ভোটারদের মধ্যে কিছুটা কাজ করবে, তা মাথায় রেখেই ভোটের জন্য দল ও শাখা সংগঠনগুলির জেলা নেতৃত্বে পুরোনো ও অভিজ্ঞদের উপরেই ভরসা রেখেছেন রাজ্য নেতৃত্ব।
কয়েক দিন আগেই পশ্চিম বর্ধমানে দলের জেলা সভাপতির পদে নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকেই রেখে দেওয়া হয়েছে। শনিবার তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের জেলা সভানেত্রী হিসেবে অসীমা চক্রবর্তী এবং যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি হিসেবে পার্থ দেবাংশীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
এঁরা দু’জনে আগেও একই পদে ছিলেন। পাশাপাশি তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির আসানসোল মহকুমার সভাপতির পদে অভিজিৎ ঘটককে রাজ্য থেকে মনোনীত করে পাঠানো হয়েছে।
তিনি একসময়ে এই সংগঠনের জেলা সভাপতি পদে ছিলেন। আগেই জেলায় আইএনটিটিইউসির সংগঠনকে ভেঙে দুর্গাপুরের জন্য আলাদা একটি কোর কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এই জেলাতেও তৃণমূলের অন্যতম সমস্যা। জেলায় দল ও শাখা সংগঠনগুলির শীর্ষ নেতৃত্বে বড় রদবদল করা হলে তা আরও বেড়ে যেতে পারত, সেই সম্ভাবনা থাকার কারণেই পুরোনো মুখদের সরানো হয়নি বলে মনে করছেন তৃণমূলেরই নেতা–কর্মীদের অনেকে।
উল্লেখ্য, কুলটি, আসানসোল দক্ষিণ এবং দুর্গাপুর পশ্চিম এই তিন আসনেই এ বার জিততে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল। ২০২১ সালে এই তিনটি আসনেই জিতেছিল বিজেপি।
এগুলি ও জেলার বাকি কিছু আসনে হিন্দিভাষী ভোটারের সংখ্যা গত ১০ বছরে ব্যাপক হারে বেড়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামলে তাঁদের সমর্থন পাওয়ার লক্ষ্যেই অঙ্ক সাজানো হয়েছে নেতৃত্বের।