মাড়ু-মসিনা গ্রাম পঞ্চায়েতে আর্থিক কেলেঙ্কারি, অর্থ কমিশনের টাকায় হোটেলের বিল পেমেন্ট
বর্তমান | ২৪ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, পুরুলিয়া: কয়েকমাসে মাড়ু-মসিনা গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে শুধু হোটেলের বিল দেওয়া হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। কখনও হোটেলের অ্যাকাউন্টে।কখনও আবার হোটেল মালিকের অ্যাকাউন্টে। অভিযোগ, পুরো টাকাটাই পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের। তারপরই তা ঘুরপথে ‘নগদ’ করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব সাসপেন্ড হওয়ার পর এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ঘিরে ঝালদার রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
গ্রাম পঞ্চায়েত ও প্রশাসন সূত্রে জানাগিয়েছে, ঝালদা ১ ব্লকের মাড়ু-মসিনা গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি হোটেলে অবৈধ ভাবে কয়েকলক্ষ টাকা পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ। শুধু টাকা পাঠানোই নয়, ওই টাকার কিছু ‘কমিশন’ দিয়ে বাকি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে। সেসময় সচিব এবং প্রধান যৌথভাবে ওই দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। আরও জানাগিয়েছে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে ৬১ হাজার ৩২০ টাকা হোটেলের অ্যাকাউন্টে দেওয়ার পরের মাসে আরও ৩৫ হাজার ২০০ টাকা পাঠানো হয়ওই অ্যাকাউন্টে। এছাড়াও হোটেল মালিকের নামেও কখনও ৪৯ হাজার,কখনও ৮১ হাজার, কখনও আবার ২০ হাজার টাকা পাঠানো হয়। অধিকাংশই পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা থেকে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ। প্রশাসন সূত্রে আরও জানাগিয়েছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচের বিষয়ে নিদির্ষ্ট গাইড লাইন রয়েছে। ওই গাইড লাইন মেনেই টাকা খরচ করতে হয়। তা না করে সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে টাকা নয়ছয় করা হয়েছে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে। সম্প্রতি ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের সচিব দীপক কুমার মাহাতকে সাসপেন্ড করে ব্লক প্রশাসন। গোটা বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসও। এবিষয়ে ঝালদা ১ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শেখ হুসেন আহমেদ বলেন, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা নয়ছয় করেছেন ওই পঞ্চায়েতের সচিব এবং প্রধান। নির্দিষ্ট গাইড লাইন না মেনে কী করে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় হোটেলের বিল মেটানো হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা। তাছাড়া কয়েকদিন পরপর হোটেলে টাকা পাঠানোর হিসেব দেখলেই বোঝা যাবে হোটেলের এতটাকা বিল হতে পারে না। ভুয়ো বিল করে টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা প্রয়োজন। এবিষয়ে পঞ্চায়েতের সাসপেন্ড হওয়া সচিব দীপক কুমার মাহাতর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উর্মিলা নায়ক এবং তাঁর স্বামী সুনীল নায়ক প্রধানের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এবিষয়ে কিছুই জানা নেই বলে দাবি তাঁদের।