• নবদ্বীপ ধাম স্টেশন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে, রেলের জায়গা থেকে উঠে যাওয়ার আজ শেষদিন, না সরলে চলবে বুলডোজার
    বর্তমান | ২৪ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: চূড়ান্ত উচ্ছেদ নোটিস ধরাল রেল। স্বেচ্ছায় সরে না গেলে বুলডোজার চলবে। আতঙ্কে নবদ্বীপ ধাম স্টেশন সংলগ্ন কুলিপাড়া, মিত্রপাড়া ঘাট রোডের রেলের জায়গায় বসবাসকারীরা। বর্ষার মুখে তাঁরা কোথায় আশ্রয় নেবেন, তা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় সকলে। রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন সাধারণ মানুষ।

    নবদ্বীপ ধাম স্টেশন সংলগ্ন পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কুলিপাড়া, মিত্রপাড়া ঘাট রোডে রেলের জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ৪৫টি পরিবার বসবাস করে। উচ্ছেদ নোটিস অনুসারে, সেখানে বসবাসকারীদের আজ মঙ্গলবার সরে যাওয়ার শেষদিন। রেলের তরফে বলা হয়েছে, স্বেচ্ছায় সরে না গেলে রেল তাঁদের উচ্ছেদ করে দেবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের পুনর্বাসন এবং উচ্ছেদের জন্য কিছু সময় দেওয়া হোক। স্থানীয় বিধায়ক ও পুরসভার পক্ষ থেকেও বাড়তি সময় দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। এই অঞ্চলে আগেও নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্ষার মুখে ফের নোটিস দেওয়াকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

    রেলের জায়গায় বসবাসকারী সাবিত্রী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ২৯ বছর ধরে মিত্রপাড়া ঘাট রোডের এই জায়গায় বসবাস করছি। বহুদিন আগে আমার দোকান তুলে দিয়েছে। রেল বলেছে, ২৪ জুনের মধ্যে আমাদের উঠে যেতে হবে। না উঠলে ২৫ তারিখে এসে বাড়ি ভেঙে দেবে। কুলিপাড়ার বাসিন্দা পূর্ণিমা পণ্ডিত, উন্নতি দাস, ঝর্ণা দত্তরা বলেন, আমরা কেউ ৩৪ বছর, কেউ ২৫ বছর, কেউ বা ২০ বছর ধরে এখানে আছি। এখানে এসে আরপিএফ অত্যাচার করছে। আমরা যাবটা কোথায়? এক বছর ধরে রেল অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করছে। কখনও দুপুরে আসছে, কখনও আবার বিকেলে আসছে। 

    ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ঊষা রায় বলেন, এর আগে আমি আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্য ডিআরএমের কাছে চিঠি পাঠিয়েছি, গত শনিবারেও একটি চিঠি পাঠিয়েছি। সোমবারও পুরসভা এবং বিধায়কের তরফে ফের রেলের কাছে অনুরোধে বলা হয়েছে বর্ষাকালে প্রবল বর্ষণ ও দুর্যোগের কারণে উচ্ছেদের সময়সীমা চার মাস বৃদ্ধি করার। প্রায় পৌনে দু’বছর আগে রেল ‘অমৃত ভারত’ প্রকল্পের কাজ ও রেলওয়ের উন্নয়নের স্বার্থে রেলের সীমানায় থাকা সমস্ত দোকান-পাট সরিয়ে দেয়, কিন্তু তারপর তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। এই হতদরিদ্র মানুষগুলির কারও কারও ঘরে বয়স্ক, শয্যাশায়ী মা-বাবাও রয়েছেন।

    নবদ্বীপ পুরসভার চেয়ারম্যান বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, রেলের জায়গায় বসবাসকারীদের ওপর বারবারই বিভিন্নভাবে অত্যাচার হচ্ছে। আমরা উন্নয়নের বিরোধী নই। আমরাও উন্নয়নের পক্ষে। কিন্তু বর্ষার সময় অবশ্যই সময় দেওয়া উচিত এবং দিতে হবে। নবদ্বীপের স্টেশন ম্যানেজার বিধানচন্দ্র রায় বলেন, এবিষয়ে ওঁরা আমার কাছে ডেপুটেশন দিয়েছিলেন। আমি ঊর্ধ্বতন  কর্তৃপক্ষের কাছে তা পাঠিয়ে দিয়েছি।
  • Link to this news (বর্তমান)