• ট্রেকারের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী, মত যাত্রীদের
    বর্তমান | ২৪ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না ট্রেকার।  অধিকাংশ ট্রেকারের টায়ার মসৃণ হয়ে গিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে একই টায়ারে ভর করে চালকরা ট্রেকার চালাচ্ছেন। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে ট্রেকারে যাতায়াত করছেন। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। তবুও যানবাহনের কোনও সুরক্ষাবিধি মানা হয় না বলেই অভিযোগ। উদাসীন চালক ও ট্রেকার মালিক ব্যবসায়ীরা। কান্দিতে পথ দুর্ঘটনায় পাঁচ যাত্রীর মৃত্যুর পর জেলার ট্রেকারগুলির সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নিয়মিত প্রশাসনিক নজরদারির দাবি করছেন যাত্রীরা। 

    বহরমপুরে মহকুমা শাসক শুভঙ্কর রায় বলেন, যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে তা আমরা খতিয়ে দেখব। ট্রেকার বা ছোট যে সমস্ত গাড়িতে সাধারণ মানুষ যাতায়াত করেন সে সমস্ত স্ট্যান্ডে গিয়ে খতিয়ে দেখা হবে। গাড়ির চাকা ও অন্যান্য সুরক্ষা বিধি মানা হচ্ছে কি না তা দেখা হবে।  

    রবিবার সকালে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদে কান্দি-বহরমপুর রাজ্য সড়কের গোকর্ণ এলাকায়। গোকর্ণ পাওয়ার হাউস সংলগ্ন মোড়ে ডাম্পারের সঙ্গে যাত্রীবোঝাই বেপরোয়া ট্রেকারের ধাক্কায় মৃত্যু হল চালকসহ চারজনের। তার মধ্যে তিনজন মহিলা। এই ঘটনায় জখম হয়েছে ১৮ জন। তাঁরা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই ট্রেকারের কোনও সুরক্ষবিধি ছিল না। চাকার টায়ার মসৃণ। অধিকাংশ ব্রেক ঠিকমতো কাজ করত না। ফলে সময় মতো ব্রেক কষেও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। বাড়ছে বিপদ। 

    বহরমপুর থানার পাশ থেকেই মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত ট্রেকার ছাড়ে। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, অধিকাংশ গাড়ির টায়ার একেবারেই মসৃণ। তাতে ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছে সকলে। বহু পুরনো যন্ত্রাংশ। সেগুলি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। এমনকী, ট্রেকারে বসার জায়গা না পেয়ে অধিকাংশ মানুষ ট্রেকারের পিছনে ঝুলতে ঝুলতে যাতায়াত করেন। এক একটি ট্রেকার ৩০ ও তার বেশি সংখ্যক যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করছে। 

    বহরমপুরের বাসিন্দা নীলোৎপল ঘোষ বলেন, হরিহরপাড়ার দিকে যে ট্রেকারগুলি যায় তাতে মাঝেমধ্যে যাতায়াত করি। যেভাবে বাদুড় ঝোলা হয়ে যাতায়াত করতে হয়, তাতে কোনও সুস্থ মানুষ যেতে পারবে না। টেকারের টায়ার মসৃণ হয়ে গিয়েছে। এই বর্ষার সময় রাস্তা পিচ্ছিল। ব্রেক কষলেও গাড়ি দাঁড়ায় না। যেকোনও সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটবে। 

    অপর এক যাত্রী রেজাউল মণ্ডল বলেন, ট্রেকার চালকরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালায়। গাড়িগুলির একেবারেই ফিটনেস নেই। সরকারিভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন। কান্দির এই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রত্যেকটি মহকুমায় টেকারগুলির ফিটনেস পরীক্ষা করা হোক।  ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)