সংবাদদাতা, ঘাটাল: ঘাটাল মহকুমায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। নদীগুলির জলস্তর কিছুটা কমেছে। তবে এখনও মহকুমার শতাধিক গ্রামের রাস্তাঘাট জলের তলায়। বহু জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন। মহকুমার ১০০টির বেশি স্কুল এখনও জলবন্দি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘাটাল চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক সৌমেন দে বলেন, তাঁদের চক্রেই ২২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং চারটি হাইস্কুল চত্বর জলমগ্ন। যতক্ষণ না স্কুল চত্বর থেকে বন্যার জল সরে যাচ্ছে, ততক্ষণ স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠন শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।
রবিবার রাত থেকে ঘাটাল মহকুমার কংসাবতী, শিলাবতী, ঝুমি এবং রূপনারায়ণের জল কমতে শুরু করেছে। চন্দ্রকোণা-১ ও চন্দ্রকোণা-২ ব্লক থেকে পুরোপুরি বন্যার জল নেমে গিয়েছে। তবে ঘাটাল শহর, খড়ার শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড সহ ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির ১০টি গ্রামপঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও জলমগ্ন। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, কোনও নদীতেই বিপদসীমার উপরে জলস্তর নেই। তবে জলস্তর খুবই ধীরগতিতে নামছে। এই গতিতে জল নামলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে এখনও চার-পাঁচদিন লেগে যাবে। যে সমস্ত এলাকা এখনও জলমগ্ন রয়েছে যোগাযোগের জন্য সেখানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বলেন, ঘাটাল ব্লক, ঘাটাল শহর এবং খড়ার শহর এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ১০০টিরও বেশি স্কুল সোমবারও খোলা সম্ভব হয়নি। কবে থেকে স্কুলগুলি খোলা হবে, তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে বন্যার জল নেমে যাওয়ার পরই সেই সমস্ত এলাকার বাসিন্দারা নানা রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ঘাটাল মহকুমা স্বাস্থ্য প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রত্যেকটি এলাকাতেই মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে। প্রত্যেক দিন এলাকায় এলাকায় মেডিক্যাল ক্যাম্প করারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে গৃহপালিত পশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
পানীয় জলের নলকূপ, ট্যাপকল বন্যার জলে ডুবে গিয়েছিল। ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি বিকাশ কর বলেন, পানীয় জল থেকে যাতে কোনও রোগ না ছড়ায়, তার জন্য নলকূপ এবং ট্যাপগুলিকে বীজাণুমুক্ত করার কাজ চলছে। পাশাপাশি প্লাবিত এলাকাগুলিতে বিশুদ্ধ পানীয় জলের পাউচ প্যাকেট বিতরণ করা হচ্ছে। মহকুমা প্রশাসন জানিয়েছে, ত্রাণের কোনও সমস্যা নেই। প্রত্যেকটি এলাকাতেই দাবিমতো পর্যাপ্ত ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। জলবন্দিদের শারীরিক সমস্যা হলে তাঁদের উদ্ধারের জন্য ২৪ ঘণ্টা ধরে বিপর্যয় মোকাবিলা টিম কাজ করছে।