নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: নির্মীয়মাণ আবাসনে এক নৈশপ্রহরীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল আসানসোল দক্ষিণ থানার মহিশীলা এলাকায়। প্রাথমিক ভাবে এটি খুনের ঘটনা বলে মনে করছে পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, ওই নৈশপ্রহরীর নাম নিরঞ্জন পাল (৫৪)। বাড়ি মহিশীলার পালপাড়ায়। সোমবার ভোরে আবাসন থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিস। সিল করে দেওয়া হয়েছে ঘটনাস্থল। পুলিসের অনুমান, ভারী কোনও ভোঁতা বস্তু দিয়ে নিরঞ্জনবাবুর মাথায় আঘাত করা হয়েছে। তাতেই মারা যান তিনি। আবাসনের মালিক থেকে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছে পুলিস। জানা গিয়েছে, নিরঞ্জনবাবুর পরিবারে অশান্তি ছিল। তদন্তে সেই বিষয়টির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে বলে পুলিস সূত্রে খবর।
ডেপুটি পুলিস কমিশনার ধ্রুব দাস বলেন, ‘মহিশীলা এলাকার একটি নির্মীয়মাণ আবাসন থেকে এক নৈশপ্রহরীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। আমরা দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছি আসানসোল জেলা হাসপাতালে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই ওই আবাসনে নৈশপ্রহরীর কাজ করেন নিরঞ্জনবাবু। আবাসন চত্বরেই থাকতেন। অন্যান্য দিনের মতো মিস্ত্রিরা কাজ করতে এসে দেখেন, নিথর হয়ে পড়ে রয়েছেন নিরঞ্জনবাবু। মাথা ফেটে রক্ত চুঁইয়ে পড়ছে। মুহূর্তেই ঘটনাটি চাউর হয়ে যায়। লোকজন জমতে শুরু করে। দেহের পাশে ইটের ভাঙা টুকরোও পড়েছিল। খুব সম্ভবত আততায়ী ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করেছে। খবর যায় পুলিসে। ঘটনাস্থলে চলে আসেন আসানসোল পুরসভার ৮৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা মেয়র পরিষদ সদস্য মানস দাস। পুলিস এসে দেহ উদ্ধার করে ঘটনাস্থলটি ঘিরে দেয়। মানসবাবু বলেন, ‘পূর্ব পাড়া অত্যন্ত শান্ত এলাকা। এই ধরনের ঘটনা প্রথম হল। এখানে নেশাড়ুদেরও খুব বেশি উৎপাত নেই। আমরা চাই পুলিস সঠিক তদন্ত করে খুনিদের খুঁজে বের করুক।’
হাসপাতালে দাঁড়িয়ে মৃতের দাদা মনোরঞ্জন পাল বলেন, ‘কয়েক মাস ধরেই আবাসনে রাত পাহারার কাজ করছিল ভাই। ওর কোনও শত্রু ছিল বলে আমাদের জানা নেই। নির্বিবাদী মানুষ ছিল। আমরা ভাবতেই পারছি না, ভাইকে কেউ মারতে পারে!’ নিরঞ্জনবাবুর ছেলে বিশ্বজিৎ পাল বলেন, ‘বাবা প্রতিদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ডিউটিতে যেত। ভোর সাড়ে পাঁচটায় বাড়ি ফিরে আসত। এদিন সকালে বাড়ি ফিরে আসেনি। আবাসনের একজন এসে বাড়িতে খবর দেয়। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবাকে দেখি। বাবার খুনির শাস্তি চাই।’
কিন্তু, কেন একজন সাধারণ নৈশপ্রহরীকে কেন খুন করা হল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিস। চুরির চেষ্টা আটকানোর জন্য তাঁকে খুন করা হয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, পরিবারিক সমস্যার বিষয়েও তদন্তে জোর দেওয়া হচ্ছে।