নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: পিএফ অফিসে ‘দালালরাজ’ চলছে। এমনই অভিযোগে সোমবার ফের সরব হলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গা। চা শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ইস্যুতে এদিন জলপাইগুড়িতে আঞ্চলিক পিএফ কমিশনারের অফিসে আচমকা হাজির হন তিনি। প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা না পেয়ে চা শ্রমিকদের কেন হয়রান হতে হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এদিন মেজাজ হারান আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ।
বীরপাড়া বাগানের এক শ্রমিক ২০২০ সালে মারা গিয়েছেন। তাঁর ছেলে পরিযায়ী শ্রমিক। বাড়ি ফিরে তিনি গত বছর জুন মাসে বাবার পিএফের টাকার জন্য অফিসে আবেদন করেন। কিন্তু এখনও টাকা পাননি। বারবার অফিসে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হওয়ায় অবশেষে বিজেপি সাংসদ মনোজ টিগ্গার দ্বারস্থ হন তিনি। ওই শ্রমিক কেন এক বছরেও তাঁর বাবার পিএফের টাকা পেলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আধিকারিকদের উদ্দেশে এদিন কাগজপত্র ছুড়ে মারেন সাংসদ। প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন, চা শ্রমিকরা বছরের পর বছর ধরে ঘুরলেও পিএফের টাকা পাচ্ছেন না। অথচ দালাল ধরলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা পাওয়া যাচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, পিএফের টাকা পেতে চা শ্রমিকদের পায়ের চটি ছিঁড়ে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে আবার একজনের টাকা অন্যজন তুলে নিচ্ছে। পিএফ অফিসে দালালরাজ চলছে। সাংসদের তোপ, এনিয়ে আগেও পিএফ কমিশনারকে বলা হয়েছে। কাজ হয়নি।
মনোজ বলেন, ডিমডিমা, লঙ্কাপাড়া, বীরপাড়া, কোহিনূর সহ কয়েকটি চা বাগানের তালিকা দিয়েছি পিএফ কমিশনারকে। ২০১৫ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ওইসব বাগানে কতজন শ্রমিক পিএফের টাকা পেয়েছেন, সেই হিসেব চাওয়া হয়েছে। ১৫ দিন সময় চেয়েছেন পিএফ কমিশনার। প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য পেলেই আদালতের দ্বারস্থ হব।
তাঁর দাবি, চা শ্রমিকদের পিএফ নিয়ে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি হচ্ছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে তদন্তের দাবিতে হাইকোর্টে যাব আমি।
এদিকে, জলপাইগুড়ির আঞ্চলিক পিএফ কমিশনার পবনকুমার বনশাল বলেন, আমরা বারবার বলছি, পিএফের টাকা পেতে তৃতীয় ব্যক্তির দ্বারস্থ হওয়ার দরকার নেই। চা শ্রমিকরা সরাসরি আমাদের অফিসে আসতে পারেন। অনলাইনেও টাকা তোলার আবেদন করতে পারেন। তাছাড়া প্রতিমাসে ক্যাম্প করছি। অফিসে দালালরাজ নিয়ে পিএফ কমিশনারের বক্তব্য, সাংসদ নির্দিষ্ট করে অভিযোগ দিন। কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে, পিএফ অফিসে দালালরাজ নিয়ে বিজেপি সাংসদের তোলা অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাল্টা তোপ দেগেছেন তৃণমূলের চা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বীরেন্দ্র বরা। তাঁর তোপ, পিএফ অফিস তো কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন। সেখানে দালালরাজ থাকলে সেই ব্যর্থতা কেন্দ্রের। পিএফ অফিসে মনোজ টিগ্গা। - নিজস্ব চিত্র।