তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: দুপুর ২টো ৪৪ মিনিট থেকে ৩টে ৫ মিনিট। মাত্র ২১ মিনিট অপারেশন চালিয়েই দলের সদস্যরা পালিয়ে যায়। যদিও শেষ মুহূর্তে দুই দুষ্কৃতী ধরা পড়ে। তবে দলের দুই মহিলা সদস্য হেঁটেই হিলকার্ট রোড ধরে পগারপার হয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট রাস্তায় থাকা বেশকিছু দোকানে সিসি ক্যামেরায় ওই দুই মহিলার ছবি ধরা পড়েছে।
দোকানের ভিতরে অপারেশন চালানোর সময় কোমর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে দোকানের কর্মীদের ভয় দেখিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। মোট আট সদস্যের দলে ছিল দু’জন মহিলা। জুয়েলারি দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে দেখা গিয়েছে, প্রথমে দুই মহিলা দোকানে ভিতর ঢোকে। তারা সোনার অলঙ্কার দেখছিল। বাকি ছ’জন পুরুষ এরপর দোকানে গেটের বাইরে থাকা সিকিউরিটি গার্ডকে মারতে মারতে ভিতরে নিয়ে যায়। দোকানের কর্মীদের হাত বেঁধে বসিয়ে দেওয়া হয় চেয়ারে। তারপরেই একের পর এক সোনার বাট সহ গয়না ব্যাগে ভরে দুষ্কৃতীরা। দোকানের প্রত্যেক কর্মীর মোবাইল ফোন একটি ব্যাগের মধ্যে রেখে দেয়। যাওয়ার সময় বিল্ডিংয়ের এক কোণে রেখে দিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। পুলিসের চোখে ধুলো দিতেই মোবাইলগুলি না নিয়ে বিল্ডিংয়ের রেখে যায় তারা।
পুলিস এসে মোবাইলের লোকেশন ট্র্যাক করার চেষ্টা করে। তখন দেখায় বিধান মার্কেট, মহাত্মা গান্ধী মোড় সংলগ্ন এলাকা। যার ফলে পুলিস সংশ্লিষ্ট এলাকায় বারবার অভিযান চালিয়েও শূন্য হাতে ফেরে। আর এর মাঝেই পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। রাস্তার ধারে দোকানের সিসি ক্যামেরার ধরা পড়ে দুই মহিলা একেবারে ভাবলেশহীন মুখ নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে হিলকার্ট রোড ধরে। পুলিসের ধারণা, পরবর্তীতে টোটো কিংবা বাসে চেপে তারা শহর ছেড়ে পালায়। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হিসেবনিকেশের পর অনেক রাতে দোকান মালিক প্রদীপ কর্মকার ১১ কোটি টাকার সামগ্রী লুট হওয়ার অভিযোগ শিলিগুড়ি থানায় দায়ের করেন। এদিকে, সোমবার মেট্রোপলিটন পুলিসের পদস্থ কর্তারা দফায় দফায় জুয়েলারি দোকানে আসেন। পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগের অফিসাররা এদিন হিলকার্ট রোডে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জোগাড় করতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক সহ একাধিক দোকানে যান। মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পূর্ব) রাকেশ সিং বলেন, দোকান মালিক ১১ কোটি টাকার সামগ্রী চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করেছেন। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে তাদের চারটি বিশেষ দল বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লিতে পৌঁছেছে। সেখানে বিভিন্ন কুখ্যাত গ্যাংয়ের অপরাধীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছে।