• ইজ়রায়েল থেকে যাত্রা শুরু, মঙ্গলবারই দেশের মাটিতে পা রাখবেন অনিরুদ্ধ, অধীর অপেক্ষায় মেদিনীপুর
    এই সময় | ২৪ জুন ২০২৫
  • মণিরাজ ঘোষ

    অবশেষে স্বস্তি! ইরান-ইজ়রায়েল ভয়ঙ্কর যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছেন। স্বস্তির নিঃশ্বাস পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে। মঙ্গলবারই ভারতের মাটিতে পা রাখতে পারেন মেদিনীপুরের বাসিন্দা অনিরুদ্ধ বেরা।

    ইজ়রায়েলের তেল আভিভ শহর থেকে অনাবাসী ভারতীয় গবেষক অনিরুদ্ধ বেরা-সহ সকল পড়ুয়াদেরই ‘অপারেশন সিন্ধু’ অভিযানের মাধ্যমে দেশে ফেরাচ্ছে ভারত সরকার। ইতিমধ্যেই, ভারতীয় দূতাবাসের তৎপরতায় বিশেষ বাসে করে তেল আভিভ শহর থেকে মিশরের শার্ম-এল-শেখ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Sharm El Sheikh International Airport)-এর উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের অনিরুদ্ধ-সহ অন্যান্য ভারতীয় গবেষক ও পড়ুয়া। সোমবার গভীর রাতেই বিমানবন্দরে তাঁরা পৌঁছে যাবেন বলে আশাবাদী অনিরুদ্ধ। সেখান থেকে ভারতীয় বায়ুসেনার বিশেষ কার্গো বিমান (C-17 Globemaster)-এ করে রওনা দেবেন দিল্লি বিমানবন্দরের উদ্দেশে।

    পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির প্রত্যন্ত ভাউদি গ্রামের বাসিন্দা অনিরুদ্ধ ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে ইজ়রায়েলের তেল আভিভ শহরের বিখ্যাত তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যান্সার বায়োফিজিক্স নিয়ে গবেষণা করছেন। অনিরুদ্ধ থাকতেন সেন্ট্রাল তেল আভিভ শহরের একটি আবাসনে। তাঁর গবেষণা সম্পূর্ণ হতে আরও দু’বছর লাগবে বলে জানান অনিরুদ্ধ।

    তবে, চলতি (জুন) মাস থেকেই সেখানে যে ভাবে যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে দেশে ফেরার জন্য উন্মুখ হয়ে পড়েছিলেন অনিরুদ্ধরা। গত কয়েকদিন ধরে সাইরেন বা এলার্ম বাজলেই তাঁদের বাঙ্কারে প্রবেশ করতে হতো বলে আগেই জানিয়েছিলেন অনিরুদ্ধ। সেন্ট্রাল তেল আভিভ শহরে ইরানি মিসাইল আছড়ে না পড়লেও, আশেপাশেই চলছিল হামলা। মিসাইল হানা আর বোমাতঙ্কের মধ্যেই শেষ ক’টা দিন কাটছিল অনিরুদ্ধ’র মতো অসংখ্য ভারতীয় পড়ুয়াদের।

    গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন)-ই ইজ়রায়েলেও 'অপারেশন সিন্ধু’-তে দেশে ফেরার জন্য পড়ুয়াদের নাম নথিভুক্ত করার আহ্বান জানায় ভারতীয় দূতাবাস। ওই দিন বিকেলেই নাম নথিভুক্ত করেন অনিরুদ্ধ। তার পর থেকে প্রতীক্ষা! একমাত্র সন্তানের চিন্তায় শালবনির বাড়িতে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটছিল অনিরুদ্ধ’র বাবা, পেশায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অসীম বেরা এবং মা রাখি বেরার।

    অনিরুদ্ধকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত শালবনিবাসী। শালবনি ব্লক পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে অনিরুদ্ধের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে প্রতি মুহূর্তে। গত কয়েকদিন ধরে অনিরুদ্ধ’র সঙ্গে প্রতিমুহূর্তে যোগাযোগ রেখে চলেছিলেন শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন কর্মাধ্যক্ষ তথা মেদিনীপুরের বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক সন্দীপ সিংহ। সোমবার রাতে সন্দীপ বলেন, ‘ গভীর রাতেই মিশরের শার্ম-এল-শেখ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে যাওয়ার কথা। তার পরে শুধুই ঘরে ফেরার প্রতীক্ষা।’ জানা যায়, দিল্লি বিমানবন্দরে অনিরুদ্ধ সহ বাঙালি পড়ুয়া বা গবেষকরা পৌঁছনোর পরই রাজ্য সরকারের তরফে তাঁদের কলকাতায় নিয়ে আসা হবে।

  • Link to this news (এই সময়)