ধ্রুবজ্যোতির হাতেই DYFI-এর লাগাম, বিতর্কে ঢাকা যুব সম্মেলনে ধুন্ধুমার!...
আজকাল | ২৪ জুন ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর ২০তম রাজ্য সম্মেলন শেষ হল বেশ কিছু অন্দরকলহ, বিতর্ক এবং নাটকীয় মোড় ঘিরে। আজকাল ডট ইন-এর পূর্বাভাস মতোই, সংগঠনের নতুন রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন ধ্রুবজ্যোতি সাহা, আর সভাপতি পদে এসেছেন পূর্ব বর্ধমান নেতা অয়নাংশু সরকার। পত্রিকা সম্পাদক সরোজ দাস।
তবে সবচেয়ে বেশি চর্চা ছড়িয়েছে যুবশক্তি-র সম্পাদকের নাম ঘোষণা ঘিরে। এক সময় যাকে সেই পদে বসানোর জোর তৎপরতা চলছিল, সেই কলকাতা জেলার এক যুব নেতা এখন নারী নির্যাতনের অভিযোগে ঘোর বিতর্কে। সূত্রের দাবি, সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনেই এই নেতা মরিয়া হয়ে ওঠেন সম্পাদক পদ ছিনিয়ে নিতে। তাঁর হয়ে প্রকাশ্য সওয়াল করেন খিদিরপুরের এক পরিচিত যুব নেতা। তবে পরিস্থিতি এমন চরমে পৌঁছয় যে, কলকাতা জেলার অন্য দুই যুব নেতার সঙ্গে তুমুল বাকবিতণ্ডা এমনকি হাতাহাতিও হয় সম্মেলনস্থলে। অথচ এরা সকলেই একই গোষ্ঠীর বলে পরিচিত।
উল্লেখযোগ্যভাবে, অভিযুক্ত যুব নেতার পক্ষ থেকে আরও এক 'আবদার' ছিল—তাঁর বান্ধবীকেও রাজ্য কমিটিতে জায়গা দিতে হবে। যদিও সেই দাবি মানা হয়নি। ক্ষোভে সম্মেলনস্থল থেকে সাময়িকভাবে বয়কট করেন তিনি। এমনকি মূল মঞ্চে উঠে অপ্রীতিকর পরিস্থিতিও সৃষ্টি করেন বলেও সূত্রের দাবি। হাত পা ছুঁড়ে কান্নাকাটিও করেন বলে সম্মেলন সূত্রে খবর।
এই অপমান ও ক্ষোভ সোশ্যাল মিডিয়ায় এনে ফেলেন তিনি নিজেই। একাধিক পোস্টে ‘বদলা’র হুমকি, ‘অন্তর্ঘাত’-এর ইঙ্গিত দেন। কমেন্ট বক্সে তাঁর অনুগামীরাও ঝাঁপিয়ে পড়ে লেখেন, 'কী ভাল লেখ তুমি কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন?', 'মানুষের নেতার কমিটি লাগে না', 'মাথা ঠাণ্ডা করো'—এইসব মন্তব্যে ভরে ওঠে পোস্ট। উত্তরে নিজেকে 'প্রকৃত নেতা হতে কমিটি লাগেনা' বলতেও ছাড়েননি ওই বিতর্কিত যুব নেতা।
সব মিলিয়ে, ২০তম সম্মেলন ডিওয়াইএফআই-এর সাংগঠনিক দুর্বলতা ও রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার একটা জ্বলন্ত প্রতিচ্ছবি তুলে ধরল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সাম্প্রতিককালে রাজ্যে কোনও তীক্ষ্ণ ছাত্র বা যুব আন্দোলনের রাশ ধরতে পারেনি সিপিএম-এর ফ্রন্ট সংগঠনগুলি। মীনাক্ষী যতটা এগিয়ে নিয়ে গেছিল ধ্রুব সাহা তা পারবে কিনা তা নিয়েও চলছে আলোচনা। সেই পরিস্থিতিতে এখনও কেন কমিটি নিয়ে এত কোন্দল ও অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ—তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে অনেকেই।
সম্মেলনের শেষে ঘোষিত হয়েছে ৯৭ জনের রাজ্য কমিটি, যাঁদের মধ্যে পরে আরও ৬ জনকে কো-অপ্ট করা হবে। এই নতুন কমিটিতে রয়েছেন মাত্র ৩ জন যুবতী সদস্য। মীনাক্ষী মুখার্জীর নেতৃত্বে নতুন আশার সূচনা হলেও, তাঁর বিদায়ের পরে যাঁরা লাগাম ধরেছেন, তাঁদের পক্ষে আদৌ রাজ্যের যুব আন্দোলনে নতুন দিশা আনা সম্ভব হবে কি না—তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।