• দিঘার হোটেলগুলি আকাশছোঁয়া ভাড়া হাঁকছে? পর্যটকের এক ফোনেই এ বার ‘বুঝবে মজা’
    এই সময় | ২৪ জুন ২০২৫
  • দিঘার হোটেল ভাড়া নিয়ে ইদানিং বিস্তর অভিযোগ সামনে আসছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় উপচে পড়ছে এ সংক্রান্ত লেখালেখি, ভিডিয়ো। এ নিয়ে বিরক্ত সাধারণ পর্যটকও। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের পোর্টালেও বেলাগাম হোটেল ভাড়া নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে বলে খবর। হোটেল বুকিংয়ের নামে কালোবাজারির অভিযোগের বিষয়টি নবান্ন অবধি এসে পৌঁছেছে। পুলিশ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। হোটেলের সামনে ঝোলাতে বলা হয়েছিল ঘরভাড়ার তালিকাও। তবে সে সব এখনও ঝোলানো হয়নি। পর্যটকরাই প্রশ্ন তুলছেন, তবে কি প্রশাসনকেও মানছেন না হোটেল ব্যবসায়ীরা? এই আবহে সোমবার দিঘায় হোটেল মালিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করল জেলা প্রশাসন। নেওয়া হলো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।

    মাঝে আর তিন দিন। ২৭ তারিখ রথযাত্রা। এই প্রথমবার দিঘায় ধুমধাম করে রথযাত্রা হবে। জগন্নাথ মন্দির থেকে বেরোবে জগন্নাথ-সুভদ্রা-বলভদ্রের রথ। যাবে মাসির বাড়ি। রেকর্ড ভিড়ের সম্ভাবনা রয়েছে এই উৎসব ঘিরে। কিন্তু এ সবের মাঝেই পর্যটকদের মাথায় চাটি মেরে হোটেল ভাড়া দ্বিগুণ হেঁকে বসে আছে একাধিক হোটেল।

    দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের অফিসে সোমবার একটি বৈঠক হয়। ছিলেন জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক। ছিলেন দিঘার ৪টি হোটেল মালিক সংগঠনের প্রতিনিধি। বলা হয়েছে, যারা হোটেল বুকিংয়ের নিয়ম অমান্য করবে, তাদের ১ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে। মঙ্গলবার থেকে দিঘার প্রতিটি হোটেলে টাঙানো হবে ভাড়ার তালিকা। সেই তালিকার বাইরে এক টাকাও বেশি নেওয়া যাবে না বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

    এ ছাড়াও ঠিক হয়েছে, রুমচার্টের নীচে দেওয়া থাকবে একটি ওয়েবসাইট ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর। সেখানে পর্যটকরা সরাসরি প্রশাসনে অভিযোগ জানাতে পারবেন। ভাড়ার তালিকা জমা দিতে হবে হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের কাছেও। তারা সেই তালিকা পরে জমা দেবে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদে।

    পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘ভাড়ার তালিকার নীচে পর্যটকদের জন্য অভিযোগের নম্বর এবং পোর্টালের লিঙ্ক দেওয়া থাকবে। সেখানে সরাসরি পর্যটকরা অভিযোগ জানাতে পারবেন। ভাড়ার তালিকা ডিএসডিএর কাছেও জমা থাকবে। পর্যটকদের অভিযোগ যদি সত্যি প্রমাণিত হয়, তা হলে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।’

    এদিন হোটেল মালিক সংগঠনগুলির তরফেও প্রশাসনের কাছে বেশ কিছু দাবি জানানো হয়। মূলত জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর থেকে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। তাতে মন্দির সংলগ্ন জাতীয় সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে অবিলম্বে রাস্তা সম্প্রসারণ করতে হবে। এ ছাড়াও বেশ কিছু জায়গায় পথবাতি লাগানোর দাবি জানানো হয়েছে বলে জানান দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্র।

    নিউ দিঘার এক হোটেল ম্যানেজার টোটোন সাউ বলেন, ‘দিঘায় হোটেল বুকিংয়ে স্বচ্ছতা আনা হোক। আমরাও প্রশাসনের নির্দেশিকাকে মান্যতা দিয়েই ব্যবসা করতে চাই। পর্যটকরা থাকলে ব্যবসা আগামিদিনে আরও বাড়বে।’

    উল্লেখ্য, দিঘাতে বেশকিছু হোটেল রয়েছে যেগুলি এই সংগঠনের বাইরে। হোম স্টে-র নাম করে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ। তাই ডিএসডিএ আগামী ১০ দিনের মধ্যে দিঘার সমস্ত হোটেলের তালিকা সংগ্রহ করবে।

  • Link to this news (এই সময়)