• বাবার থেকে জয়ের মার্জিন বাড়ল মেয়ের, কোন অস্ত্রে বিজেপি-কংগ্রেসকে কুপোকাত আলিফার?
    এই সময় | ২৩ জুন ২০২৫
  • বঙ্গ রাজনীতির অন্যতম জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন কালীগঞ্জের বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ(লাল)। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ১ লক্ষ ১২ হাজারের কাছাকাছি। বিজেপি প্রার্থী পেয়েছিলেন প্রায় ৬৫ হাজার ভোট। জয়ের ব্যবধান ছিল প্রায় ৪৭ হাজারের কাছাকাছি। নাসিরুদ্দিন আহমেদের মৃত্যুর পর তাঁর কন্যা আলিফা আহমেদের উপরেই ভরসা রেখেছিল তৃণমূল। পেশায় সফট অয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, কর্পোরেট আদব কায়দায় চোস্ত, এলাকাবাসীর ‘ঘরের মেয়ে’ আলিফার অন্যতম টার্গেট ছিল বাবার রেকর্ড ছাপিয়ে যাওয়া।

    প্রথম থেকেই দল তাঁর উপরে ভরসা দেখিয়েছে। বিধানসভা উপনির্বাচন বলে এই চ্যালেঞ্জ হালকা ভাবে নেননি আলিফাও। প্রথম থেকেই প্রচার ময়দানে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। অবশেষে মিলল সুফলও। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে ৪৯ হাজার ৭৫৫ ভোটে হারিয়ে জয় ছিনিয়ে এনেছেন আলিফা। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ১ লক্ষ ২ হাজার ১৭৯। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বিজেপি প্রার্থী আশিস ঘোষ। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৫২ হাজার ৪২৪। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী কাবিলউদ্দিন শেখ। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ২৮ হাজার ২৬২। এ ছাড়াও নোটাতে পড়েছে ২৫০০ ভোট।

    কালীগঞ্জে উপনির্বাচনের জন্য বিজেপি কার্যত নজরকাড়া প্রচার করেছে। আশিস ঘোষের সমর্থনে ময়দানে দেখা গিয়েছিল সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারী, বঙ্গ বিজেপির এই দুই তাবড় নেতাকে। এ ছাড়াও ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের দায়িত্ব দিয়ে ময়দানে নামানো হয়েছিল একাধিক বিধায়ককেও। কিন্তু, তার পরেও সে ভাবে দাগ কাটতে পারল না গেরুয়া শিবির।

    কালীগঞ্জের উপনির্বাচনে মেরুকরণের ছাপ পড়া নিয়ে আগে থেকেই আশঙ্কা করেছিল কংগ্রেস। গত ৭৪ বছরের নির্বাচনী তথ্য অনুযায়ী, ৪৪ বছর আসনটি ছিল হাত শিবিরের দখলে। বাম জমানাতেও একটি বড় সময়ে কালীগঞ্জে কংগ্রেসের দাপট ছিল অব্যাহত। এর পর তা যায় আরএসপির দখলে। ২০১১ সালে প্রথম কালীগঞ্জে জেতে তৃণমূল। সে বারও জোট সঙ্গী ছিল কংগ্রেস। ২০১৬ সালে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী হাসানুজ্জামান শেখ এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হলেও ২০২১ সালে খেলা ঘুরে যায়।

    সোমবার প্রথম কয়েক রাউন্ড গণনার পর কংগ্রেস প্রার্থী এগিয়ে থাকলেও শেষে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে বিজেপি। কংগ্রেস প্রার্থী কাবিলউদ্দিন শেখ বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে মেরুকরণের রাজনীতি করার অভিযোগ তুলেছেন। যদিও বিজেপি প্রার্থী আশিস ঘোষ দাবি করেছেন, ‘উপনির্বাচনের ফল অনেক সময়ে শাসকদলের পক্ষে যায়। ভয় ভীতি পান সাধারণ মানুষ।’ যদিও তৃণমূল প্রার্থী আলিফা দাবি করেছেন, তিনি আরও বেশি মার্জিনে জয়ের প্রত্যাশা করেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘মানুষ ভরসা করেছেন। কালীগঞ্জের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। এই জয় দায়িত্ব বাড়িয়ে দিল। আরও একটু বেশি মার্জিনের প্রত্যাশা করেছিলাম।’

  • Link to this news (এই সময়)